
প্রধানমন্ত্রী নেত্রী মমতাময়ী মা আমাকে বাঁচান। আম্মাজান, আপনি একটু দয়া করুন আমার ওপর। আমার পরিবারের আয় রোজগারের উৎস আমি মা। আপনি চাইলেই সব কিছু করতে পারেন মা। আমাকে বাঁচার সুযোগ করে দিন।’
ঠিক এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে বারবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিজের মা বলে কথাগুলো বলে যাচ্ছেন শরীরের ভাল্ব নষ্ট হয়ে যাওয়া পীরগঞ্জ উপজেলার কর্ণই হাটপাড়া এলাকার মৃত হাবিবুর রহমানের ছেলে নূর ইসলাম (৩০)।
মুখে শুধু কথা একটাই— আপনি চাইলেই (প্রধানমন্ত্রী) মা আমাকে বাঁচাতে পারবেন। আপনার একটি সাহায্য আমাকে ও আমার পরিবারকে বাঁচিয়ে দেবে মা। আপনার কাছে সাহায্যের চিঠি পাঠিয়েছি মা। জানি না গেছে কি না।
জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরেই শরীরের দুটি ভাল্বের মধ্যে একটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কষ্ট করে চলছেন নূর ইসলাম। টাকা জোগাড়ের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভিক্ষা চাচ্ছেন তার পরিবার। একটা সময় কাজ করতেন এলাকার নাপিতের দোকানে নূর ইসলাম।
এরপর সেটি ছেড়ে দিয়ে মানুষের বাগান দেখাশোনার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সে। কষ্ট করে হলেও তিন ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে চলছিল পরিবারটি। এভাবেই কষ্ট নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলে জীবনযাপন। অভাবের সংসারে যেন আরো বড় বিপদ এলো তাদের সামনে।
বছর খানের আগে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে নূর ইসলাম। এলাকাবাসীর কাছে আর্থিক সাহায্যের প্রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যান দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে। সমস্যার কোনো সঠিক চিকিৎসা না পেয়ে চলে যান সিরাজগঞ্জের খাজা ইউনুস মেডিকেল কলেজে।
কিছুদিন সেখানে চিকিৎসা নেয়ার পরেই ফুরিয়ে যায় এলাকাবাসীর কাছে সাহায্য নেয়া সেই টাকা। চলে আসনে নিজ বাসায়। অসহায় হয়ে পড়ে নূর। অবশেষে কোনো উপায় না পেয়ে এলাকার এক হোমিও চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা নেন।
কিন্তু বড় সমস্যা তো আর ছোট ওষুধ দিয়ে হয় না। আস্তে আস্তে শরীরের অবস্থার অবনতি। কি করবেন দিশেহারা যেন তার পরিবারটি। এরপরে আবারো এলাকার সকলেই তার পাশে এসে দাঁড়ায়। তাকে পাঠানো হয় ঢাকা হূদরোগ জাতীয় ইনস্টিটিউটে। অবশেষে ধরা পরে মূল সমস্যা।