বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:৫৮ পূর্বাহ্ন

Headline :
চিলমারীতে নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার- ৪ চিলমারীতে ৭৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ নারী আটক কুড়িগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি দুর্জয় গ্রেফতার চিলমারী সরকারী কলেজে নতুন অধ্যক্ষর যোগদান নৌডাকাতি রোধে পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  রাজিবপুরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবীতে কাউনিয়ায় মুখে কালো পতাকা ধারণ করে বিক্ষোভ মিছিল গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে চিলমারীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল চিলমারী মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে সরঞ্জামসহ ৬ জুয়ারি গ্রেফতার  চিলমারীতে নানা আয়োজনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস-২০২৫  পালিত

*** রেলওয়ের লোকসান পিছু ছাড়ছে না ***

বাংলাদেশ রেলওয়ের বিপুল সম্ভাবনা আর বিনিয়োগের সত্তে ও লোকসান কোনো অবস্থাতে পিছু ছাড়ছে না। বিগত ৯ বছরে এ খাতে ৫০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে।

কিন্তু দীর্ঘ এ সময় পরিচালনা ব্যয় হয়েছে ১৭ হাজার মাত্র ৩১৮ কোটি। আর আয় হয়েছে ৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ লোকসান হয়েছে ৯ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

ধারাবাহিক লোকসানের জন্য রেলের অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতিকেই দায়ী করছে সাধারণ জনগণ ও পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, রেলের অনিয়ম, দুর্নীতি রোধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মধ্যে নিয়ে এলে রেলকে লাভজনক খাতে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

তবে রেল সচিব মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, রেলে বিনিয়োগের সঙ্গে আয়ের সম্পর্ক নেই। এটা গণপরিবহণ। সরকার মানুষের সেবা দিতে চালায় রেল। এখানে মুনাফার জন্য রেল চালায় না সরকার। এ ছাড়া রেলের ভাড়া তো ইচ্ছে করলেই আমরা বাড়াতে পারব না।

রেলওয়ের তথ্যমতে, ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত ৯ বছরে রেলে আয় হয়েছে ৮ হাজার ১৪৮ কোটি টাকা। আর পরিচালনা ব্যয় হয়েছে ১৭ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। মোট লোকসান হয়েছে ৯ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

অথচ গত ৯ বছর ২০০৯-১০ অর্থবছর থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছর পর্যন্ত সরকার রেলে বিনিয়োগ করেছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার উপরে। সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে রেলের উন্নয়নে ব্যয় হয়েছে ১৪ হাজার ৬৩৮ কোটি ২৬ লাখ টাকা।

তবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব এখনো পাওয়া না গেলেও এ বছরে লোকসান ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে সংশিষ্টরা। এ ছাড়াও ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রেল খাতে ১২ হাজার ৫৯৯ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের র‌্যাংকিংয়ে ২০১১-১২ সালে বাংলাদেশের রেল অবকাঠামোর অবস্থান ছিল ১৪২টি দেশের মধ্যে ৭৩তম। সবশেষ ২০১৭-১৮ সালে ১৪০টি দেশের মধ্যে ৬০তম স্থানে চলে এসেছে দেশের রেল অবকাঠামো। এ সময় রেলের সার্বিক স্কোরও ২ দশমিক ৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ২ দশমিক ৯৪ (৭-এর মধ্যে)। অবকাঠামো উন্নয়নে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি হলেও আয় বাড়ছে এ প্রতিষ্ঠানের।

জানা যায়, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে রেল খাতের উন্নয়নে নজর দেয়। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে রেলে অনুন্নয়ন (পরিচালনা) ব্যয়ের চেয়ে উন্নয়ন খাতে (প্রকল্প বাস্তবায়ন) বেশি বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। গত ৯ অর্থবছরে (২০০৯-১০ থেকে ২০১৭-১৮) রেলের পেছনে ব্যয় করা হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগ করা হয়েছে ২৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। পরিচালনা খাতে ব্যয় করা হয়েছে ১৭ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা। বাকিটা উন্নয়ন প্রকল্পে।

রেলওয়ের অর্থ শাখার তথ্য অনুযায়ী ২০০৯-১০ অর্থবছরে রেলের আয় ৫৮৪ কোটি টাকা, পরিচালনা ব্যয় ১ হাজার ৩৪২ কোটি টাকা, লোকসান ৭৫৮ কোটি টাকা। ২০১০-১১ অর্থবছরে আয় ৬১৭ কোটি টাকা, পরিচালনা ব্যয় ১ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, লোকসান ৯৫৮ কোটি টাকা।

২০১১-১২ অর্থবছরে আয় ৬২৯ কোটি টাকা, ব্যয় ১ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকা, লোকসান ১০৫০ কোটি টাকা, ২০১২-১৩ অর্থবছরে আয় ৮০৪ কোটি টাকা, ব্যয় ১ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা, লোকসান ৮০৩ কোটি টাকা, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে আয় ৯৩১ কোটি টাকা, ব্যয় ১ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা, লোকসান ৮০৩ কোটি টাকা, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে আয় ৯৫৬ কোটি টাকা, ব্যয় ১ হাজার ৮২৭ কোটি টাকা, লোকসান ৮৭১ কোটি টাকা, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আয় ১ হাজার ২৩ কোটি টাকা, ব্যয় ২ হাজার ২২৯ কোটি টাকা, লোকসান ১ হাজার ২০৬ কোটি টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আয় ১ হাজার ৩০৬ কোটি টাকা, ব্যয় ২ হাজার ৫৩২ কোটি টাকা, লোকসান ১ কোটি ২২৬ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আয় ১ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা, ব্যয় ২ হাজার ৭১৬ কোটি টাকা, লোকসান ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। প্রাপ্ত এ তথ্যনুযায়ী, প্রতি বছর রেলের লোকসান বেড়েই চলছে।

রেল খাতের ভর্তুকির পরিমাণ কমাতে বর্তমান সরকারের আমলে দুই দফায় রেলওয়ের ভাড়া বাড়ানো হয়। এর মধ্যে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রেলের ভাড়া ৭ থেকে ৯ শতাংশ বাড়ানো হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *