বুধবার , মার্চ ২২ ২০২৩
Home / সারা দেশ / লালমনিরহাটে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী**

লালমনিরহাটে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী**

মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান বিপ্লব,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ

টানা ভারি বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়ে লালমনিরহাটে প্রায় ১৫ হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরও কি পরিমাণ পানি আসবে তা ধারনা করা যাচ্ছে না। পানি গতি নিয়ন্ত্রন করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেটই খুলে দেয়া হয়েছে। ময়ের সাথে সাথে বাড়ছে পানি বন্দি পরিবারের সংখ্যা।

বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বেলা ১২ টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার। যা স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার। বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

তিস্তা ব্যারাজের কন্ট্রোলরুম জানায়, ভারত গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেয়ায় প্রচন্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। ফলে তিস্তার পানিতে পাটগ্রাম উপজেলায় অবস্থিত বহুল আলোচিত বিলুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা- দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সির্ন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়নের চর,আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ, গোকুন্ডা ইউনিয়ন ও কালীগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের এলাকার প্রায় ১০/১৫ হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার একর আমন ধানের বীজ তলাসহ অনেক ফসলী ক্ষেত তিস্তার পানিতে ডুবে গেছে।

এদিকে তিস্তায় পানি প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়নের তালেবমোড়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে। বাঁধটি রক্ষায় রাতভর স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে নিরন্তর চেষ্টা চালাছেন উপজেলা নিবার্হী অফিসার রবিউল হাসান ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মসিউর রহমান মামুন।

চরাঞ্চলের পানিবন্দী খেটে খাওয়া মানুষগুলো শিশুখাদ্য ও নিরাপদ পানির সমস্যায় পড়েছে। তিনদিন পানিবন্দী থাকলেও সরকারিভাবে কোনো ত্রাণ বা শুকনো খাবার পৌঁছানো হয়নি বলে পানিবন্দী পরিবারগুলোর অভিযোগ। বন্যার পানিতে ডুবে গেছে চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট, হাট বাজার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। জেলার নদী তীরবর্তী অঞ্চলের বিদ্যালয়গুলো বন্যার পানি ডুবে যাওয়ায় পাঠদান বন্ধ রয়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর সিন্দুর্না গ্রামের সাহেব আলী বলেন, মধ্যরাতে হঠাৎ তিস্তার পানি বাড়তে থাকে। টানা তিনদিন থেকে পানিবন্দী রয়েছেন তারা। তারাও কোনো প্রকার সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ করেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলী হায়দার বলেন, জেলা ত্রাণ তহবিলে এক হাজার ৯৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১৫০ মেট্রিক টন জিআর চাউল ও আড়াই লাখ টাকা মজুদ রয়েছে। উপজেলা থেকে তালিকা পেলে বরাদ্দ দেওয়া হবে।

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারেজের ডালিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, তিস্তার পানি প্রবাহ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টায় বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। ব্যারেজ রক্ষার্থে সবগুলো জলকপাট খুলে দিয়ে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।

About admin

Check Also

কাউনিয়ায় মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে ভূমিহীন মুক্ত উপজেলা ঘোষনায় সংবাদ সম্মেলন

কাউনিয়া (রংপুর) থেকে,আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়াঃ   মুজিববর্ষে বাংলাদশের একজন মানুষও ভূমিহীন গৃহহীন থাকবে না আর” …

কাউনিয়ায় মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে রাস্তায় কাঁদা পানিঃ জনদূর্ভোগ

কাউনিয়া(রংপুর) থেকে,আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়াঃ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতে কাউনিয়া উপজেলার প্রাণ কেন্দ্র গালস্ স্কুল মোড় থানা …

কাউনিয়ায় যুবদলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

কাউনিয়া( রংপুর)প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না কে গ্রেফতারের প্রতিবাদে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *