সুনামগঞ্জের চলমান বন্যায় জেলার ৮ উপজেলায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৪ হাজারে। যদিও বেসরকারি হিসাবে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি।সরকারি উদ্যোগে ১০টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও দুর্গতরা আশ্রয় কেন্দ্রে আসছে না। তবে দুর্গতদের মধ্যে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।এ পর্যন্ত বন্যার্তদের সহায়তার জন্য ৫০০ টন চাল, সাড়ে ১০ লাখ টাকা এবং ৫ হাজার ২৩৫ প্যাকেট শুকনো খাবার এসে পৌঁছেছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ইতিমধ্যে ২৪৮ মেট্রিক টন জিআর চাল, ২ লাখ ৫০ হাজার টাকার জিআর ক্যাশ এবং ৩ হাজার ৭৬৫ প্যাকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে।বন্যায় এ জেলায় মোট ২ লাখ ৬০ হাজার হেক্টর আবাদী জমি তলিয়ে গেছে। জেলায় এ পর্যন্ত ১২৬৩ হেক্টর আউস এবং ১২৫ হেক্টর আমন বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাছাড়া প্রায় ২ কোটি ৬২ লাখ টাকার মৎস্য সম্পদ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সুনামগঞ্জ জেলার সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সাম্প্রতিক বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ফরিদুল হক এসব তথ্য জানান।
ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক (রুটিন দায়িত্ব) মো.শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ।
এ সময় তিনি বলেন, জেলার বানভাসী মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আমাদের সকলের উচিত ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানো। তিনি চলমান বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ, সাধারণ জনগণ সবাইকে একযোগে সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করা। বন্যায় সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবেলায় সরকারের প্রস্তুতি আছে। ত্রাণসামগ্রী যা প্রয়োজন তা দেয়া হবে। তবে প্রতিটি বন্যার্ত মানুষের হাতে যেন ত্রাণ পৌঁছে- সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সচেতন ও আন্তরিক থাকতে হবে।
সভায় স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এমরান হোসেন, সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হায়তুননবী, পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর সিদ্দিক ভুইয়া, নির্বাহী প্রকৌশলী পওর-২ খুশি মোহন সরকার, বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার জনাব সমীর বিশ্বাস, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবুল কাশেম, সদর উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা, সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নিগার সুলতানা কেয়, ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন, সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, জনপ্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।