সোমবার , ফেব্রুয়ারি ১৭ ২০২৫
Home / সারা দেশ / ওকে দয়া করে রেহাই দিন’

ওকে দয়া করে রেহাই দিন’

এম শাহীন সারোয়ার,কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ

পাশের বাড়ির ষষ্ঠ শ্রেণির মেয়েটিকে নিয়ে ঘুমিয়েছিলেন তিনি। এক সন্তানের মা ওই নারীর স্বামী তাঁকে ছেড়ে যাওয়ার পর তিনি একাই থাকেন। একা থাকতে ভয় পাচ্ছিলেন বলে পাশের বাড়ির মেয়েটিকে রাতে নিজের বাড়িতে রেখেছিলেন তিনি। গভীর রাতে পাঁচ যুবক দরজা ভেঙে ধর্ষণ করেন তাঁদের দুজনকে। ধর্ষণের শিকার ওই নারী ধর্ষক যুবকদের হাতে পায়ে ধরে শিশুটিকে ধর্ষণ না করতে অনুনয় করেছিলেন। কিন্তু তাঁরা শোনেননি। ধর্ষণের একপর্যায়ে জ্ঞানও হারিয়ে ছিল শিশুটি।

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার একটি পাহাড়ি এলাকায় গত বুধবার রাত ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষকদের হুমকির মুখে প্রথমে ভয়ে মুখ খোলেনি ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর পরিবারের লোকজন। তবে গত শুক্রবার রাতে স্থানীয় এক তরুণ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি তুলে ধরলে সবাই জানতে পারে। গতকাল শনিবার বেলা ১১টার দিকে আজিজনগর বাজারে ধর্ষকদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। এরপর ধর্ষণের শিকার ওই নারী ও শিশুটির বাবা-মা চকরিয়া থানায় গিয়ে অভিযোগ করেন।

ধর্ষণের শিকার শিশুটি একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। আর নারীটি একজন গৃহিণী । তাঁর ১২ বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে। পাহাড়ি এলাকায় যে দুই বাড়ির নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে, তার দুই মাইলের মধ্যে আর কোনো বাড়িঘর নেই।

ধর্ষণের শিকার নারী অভিযোগ করেন, ধর্ষণের পর অভিযুক্তরা হুমকি দিয়েছেন তাঁদের। ধর্ষকেরা বলেন, ঘটনাটি জানাজানি হলে পুরো পরিবারকে মেরে ফেলা হবে। এ কারণে ঘটনার পর থানায় যাওয়ার সাহস পাননি তাঁরা। কাউকে বলার সাহসও পাননি। তবে ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে গোপনে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করিয়েছেন তার বাবা–মা।

ওই নারী বলেন, স্থানীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী ও ধর্ষণের শিকার শিশুটির বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এ কারণে তিনি সাহস করে গতকাল বিকেলে থানায় যান।

ধর্ষণের শিকার শিশুটির বাবা বলেন, গত বুধবার রাত ১১টার দিকে পাঁচ যুবক দরজা ভেঙে তাঁর ঘরে ঢোকেন। এ সময় তাঁরা তাঁকে লাঠির আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেন। পরে তাঁরা পাশের ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে তাঁর মেয়ে ও সঙ্গে থাকা প্রতিবেশী নারীকে ধর্ষণ করেন।

ধর্ষণের শিকার নারী বলেন, ‘দরজা ভেঙে ঘরে যখন ধর্ষকেরা প্রবেশ করে তখন তাদের পায়ে ধরেছি, শিশুটিকে ধর্ষণ না করার জন্য। কিন্তু তারা রেহাই দেয়নি। একসময় শিশুটি জ্ঞান হারায়।’

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের বিষয়টি তিন দিন পুলিশের অগোচরে ছিল। শিশুটির মা-বাবা ও ধর্ষণের শিকার নারীটি গতকাল বিকেলে থানায় এসেছেন। শিশুটি কক্সবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। অভিযুক্তদের ধরতে অভিযান চলছে।

About admin

Check Also

কাউনিয়ায় সিএনজির ধাক্কায় বৃদ্ধের মৃত্যু 

আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া কাউনিয়া (রংপুর)প্রতিনিধি   কাউনিয়ার বিজলের ঘুন্টি নামক স্থানে রংপুর-কুড়িগ্রাম মহাসড়কে শনিবার বিকালে …

কাউনিয়ায় ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারণ সভা

আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া কাউনিয়া (রংপুর)থেকে: কাউনিয়ায় ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের বার্ষিক সাধারন সভা ২০২৫ রেজিষ্ট্রি …

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ও বিচারের দাবিতে কাউনিয়ায় কফিন মিছিল

আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া কাউনিয়া (রংপুর) প্রতিনিধি,   গাজীপুরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হাতে নিহত আবুল কাশেম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *