যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে প্রিয়া সাহার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে করা মামলা নেওয়ার তিন আবেদন খারিজ হয়ে গেছে।
রোববার ঢাকার দুই আদালত এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেয়।
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় সরকারের অনুমতি এবং আনুষাঙ্গিক আরও প্রক্রিয়া অনুসরণ না করায় এ তিন মামলার আবেদন খারিজ করা হয় বলে আদালত জানিয়েছে।
ঢাকার মহানগর হাকিম জিয়াউল হাসানের আদালতে একটি মামলার আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সায়্যেদুল হক সুমন আর ঢাকার মহানগর হাকিম আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে আরেকটি মামলার আবেদন করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী পরিষদের সদস্য ইব্রাহিম খলিল।
এছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একই অভিযোগে একটি মামলার আবেদন করেন মো. আসাদ উল্লাহ্ নামের এক ব্যক্তি।
গত ১৬ জুলাই ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশি পরিচয় দেয়া প্রিয়া সাহা বলেন, ‘স্যার, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। সেখানে ৩৭ মিলিয়ন হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান বিলীন হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই। সেখানে এখনো ১৮ মিলিয়ন সংখ্যালঘু মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু থাকার জন্য সাহায্য করুন।’
ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশ নিয়ে এমন অভিযোগের ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। তার বক্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহার অভিযোগ নিয়ে এরই মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া এসেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও। এক ফেসবুক পোস্টে রোববার তার অভিযোগগুলোকে ভয়ঙ্কর মিথ্যা বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ও তার তথ্যপ্রযুক্তি-বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
অভিযোগ উঠলেও প্রিয়া সাহার বিরুদ্ধে এখনই রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হবে না বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি জানান, সবার আগে প্রিয়া সাহার বক্তব্য শুনবে সরকার। এরপর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া প্রিয়ার অভিযোগকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে মনে করেন না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেছেন, এটা তার (প্রিয়া সাহার) ব্যক্তিগত ঈর্ষা চরিতার্থের জন্য করেছেন। তার বক্তব্যে রাষ্ট্রদ্রোহ হয়ে গেছে বলে মনে করি না।