
শাহীন সারোয়ার, চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ
আগামী বছরের জুনের মধ্যে ১৫টি নতুন ট্রেন চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।
বুধবার দুপুরে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন চট্টগ্রামের পাহাড়তলী কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান। রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
রেলমন্ত্রী বলেন, কোচ ও ইঞ্জিন সংকটের কারণে নতুন ট্রেন চালু করা যাচ্ছে না। চলতি বছরেই ২২০টি কোচ হাতে পাবে রেলওয়ে। আর এসব কোচ পাওয়া গেলে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে নতুন ১৫টি ট্রেন চালু করা হবে।
রেলে ইঞ্জিন সংকটকে বড় বাধা হিসেবে আখ্যায়িত করে মন্ত্রী বলেন, ‘রেলওয়েতে পর্যায়ক্রমে কোচ এলেও ইঞ্জিন সংকট রয়েছে। এই সংকটরে প্রেক্ষিতে ভারত থেকে ২০টি ইঞ্জিন ভাড়ায় আনার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। মেয়াদোত্তীর্ণ ইঞ্জিনগুলো দিয়ে ট্রেন চালাতে গিয়ে সিডিউল ঠিক রাখা যাচ্ছে না। চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ছে।’
কারখানা পরিদর্শনের আগে পোর্ট ইয়ার্ড ও হালিশহর রেলওয়ে ট্রেনিং সেন্টার পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হালিশহর রেলওয়ের ট্রেনিং অ্যাকাডেমি পরিদর্শন করে সেখানকার বাস্তব অবস্থা দেখেছি। রেলওয়ের বিভিন্ন স্থাপনা ও পরিত্যক্ত ভবন পড়ে থাকতে দেখেছি।’
রেলওয়েকে কীভাবে আগের অবস্থানে নেওয়া যায় তা নিয়ে কাজ করছেন জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এক সময় রেলওয়ের অনেক সুনাম ছিল। এখন পুরো রেল বিভাগ নতুনভাবে সাজানো হচ্ছে, যাতে করে আবারও সেই সুনাম ফিরিয়ে আনতে পারি। ইতিমধ্যেই রেলওয়ের ডিজিটাল করার অংশ হিসেবে যাত্রীদের সুবিধার্থে অনলাইনে টিকিট কাটার জন্য বিশেষ অ্যাপও চালু করা হয়েছে।’
মিটারগেজের ২৬টি কোচ দিয়ে নতুন ট্রেন চালু করা সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘রংপুরে মাত্র একটি ট্রেন যাওয়া-আসা করে। এর জন্য বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়। কারণ ওই ট্রেনের শিডিউল ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বিপর্যয় ঘটছে। সেটি মাথায় রেখে ঈদের আগেই নতুন ২৬টি কোচ দিয়ে ওই রুটে নতুন একটি ট্রেন যুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঈদের আগেই ট্রেনটি চালু করা হবে।’
চবিতে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ট্রেন চালুর আশ্বাস
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয় রুটে চালুর আশ্বাস দিয়েছেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।
বুধবার বিকালে চবিতে চলাচলকারী শাটল ট্রেন পরিদর্শন করতে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি এ আশ্বাস দেন।
এর আগে ক্যাম্পাসে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে তাকে স্বাগত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীন আখতারসহ (রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা। এ সময় মন্ত্রী শাটলের একটি বগি ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষার্থীদের কাছে সমস্যার কথা জানতে চান। এরপর তিনি সিনেট কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ, রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় রেললাইন সংস্কার করা, শাটলের কোচ বৃদ্ধি করা, বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনের পরিধি বাড়ানো। বিশ্ববিদ্যালয় ও ষোল শহরের স্টেশনে প্লাটফর্ম করে দেওয়াসহ আরও বেশ কিছু দাবি তুলে ধরেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
দাবিগুলোর প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসে আসার সময় খেয়াল করেছি রেললাইনের নাজুক অবস্থা। এছাড়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ভোগান্তির কথাও জেনেছি। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বিবেচনা করে শিগগিরই আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত একটি ট্রেন বিশ্ববিদ্যালয় রুটে চালু করা হবে। এছাড়া বর্তমানে যে ট্রেনগুলো রয়েছে সেগুলোর আধুনিকায়ন করা হবে।’
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে হওয়ায় চবি শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১৯৮১ সাল থেকে চালু করা হয় শাটল ট্রেন। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের যাতায়েতের মাধ্যম এ শাটল ট্রেন। প্রতিদিন প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার শিক্ষার্থী শাটল ট্রেনে যাতায়াত করেন।