
আলমগীর হোসাইন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তবে এখনও ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় অববাহিকার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের ঘর-বাড়ি থেকে পানি নেমে যায়নি। ফলে এসব এলাকার বন্যা দুর্গত মানুষজন ঘরে ফিরতে না পারায় অতি কষ্টে উঁচ বাঁধ ও সড়কে আশ্রয় নিয়ে দুর্বিসহ জীবন-যাপন করছে। ডায়রিয়া, চর্মরোগসহ পানি বাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন এসব এলাকার মানুষজন।
সিভিল সার্জন ডা. এসএম আমিনুল ইসলাম জানান, জেলার বন্যা দুর্গতদের জন্য ৮৫টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। মেডিকেল টিম বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষজনের মাঝে পানি বিশুদ্ধ করণ টেবলেট সরবরাহ করা ছাড়াও পানিবাহিত রোগের চিৎিসা সেবা প্রদান করছে।
বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের হাতে কাজ ও ঘরে খাবার না থাকায় চরম খাদ্য সংকটে পড়েছেন তারা। সরকারী ত্রাণ সহায়তার পাশাপাশি বেসরকারী বিভিন্ন সংগঠন ও সাহায্য সংস্থা বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করলেও তা বিপুল সংখ্যক বন্যা কবলিত মানুষের জন্য একবারেই অপ্রতুল।
অন্যদিকে গত ২৪ ঘন্টায় ফুলবাড়ী উপজেলায় সাথী (৩) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে চলতি বন্যায় জেলায় এ পর্যন্ত পানিতে ডুবে ১৭ শিশুসহ ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদের মধ্যে উলিপুর উপজেলায় ৯ শিশুসহ ১১ জন, চিলমারী উপজেলায় ৬ শিশু, রৌমারী উপজেলায় ১ জন, রাজিবপুর উপজেলায় ১ শিশু ও কুড়িগ্রাম সদর উপজেলায় ১ জন।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ও চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসক মোছা: সুলতানা পরভীন জানান, বন্যায় জেলার ৯ উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৯ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। বন্যার্তদের জন্য এপর্যন্ত সরকারীভাবে ১ হাজার মেট্রিক টন চাল, ১০ হাজার ৫শ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও বন্যা কবলিত এলাকার শিশু ও গবাদি পশুর খাদ্য কেনার জন্য ২ লাখ করে ৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী ভাবে কেউ ত্রাণ বিতরণ করতে চাইলে জেলা প্রশাসনের তত্বাবধানে বিতরণ করতে বলা হয়েছে।