আলমগীর হোসাইন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থা নামে একটি এনজিও’র বিরুদ্ধে দুস্থ্য মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচী (ভিজিডি)’র সুবিধাভোগীদের সঞ্চিত প্রায় ১৫লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সঞ্চিত অর্থের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে প্রায় ৭মাস পেড়িয়ে গেলেও টাকা না পেয়ে বিভিন্ন জায়গায় ধরনা দিয়ে বেরাচ্ছেন ৪ইউনিয়নের ২হাজার ১৫০ দুস্থ্য নারী। সংস্থাটির নিকট থেকে অর্থ আদায়ে মহিলা বিষয়ক দপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা প্রশ্নবিধ্য।
জানা গেছে,কর্মে অক্ষম ও অস্বচ্ছল মহিলাদের জন্য দুস্থ্য মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচী(ভিজিডি)’র আওতায় ২০১৭-২০১৮ সালে উপজেলার ৬ ইউনিয়ন মিলে ৩হাজার ২২৩জন সুবিধাভোগী প্রতি মাসে ৩০ কেজি হারে চাল পেয়ে আসছে। দুই বৎসর শেষে নিজেদের স্বাবলম্বী হওয়ার লক্ষে মাসিক ২শ টাকা হারে সঞ্চয় উত্তোলন করার নিয়ম রয়েছে। দুস্থ্য ওই সুবিধাভোগীদের মাসে দু’বার প্রশিক্ষণ দান ও ২শ টাকা হারে সঞ্চয় উত্তোলনের জন্য ২০১৭-২০১৮ সালে অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয় সংস্থা নামে একটি এনজিও সরকার কর্তৃক মনোনিত হয়। ওই সংস্থাটিকে উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন(রাণীগ্ঞ্জ, থানাহাট,অষ্টমীচর ও চিলমারী)’র ২হাজার ১৫০ কার্ডধারীর দায়িত্ব দেয়া হয়। নিয়মানুযায়ী জন প্রতি ২শ টাকা হারে ২৪মাসে মোট ৪হাজার ৮০০টাকা উত্তোলন করে ভিজিডি সঞ্চয়ী হিসাব ১০০১১৬৫০ অগ্রণী ব্যাংক চিলমারী শাখায় রাখার কথা। এবং ২৪মাস পরে তাদের স্ব-স্ব সঞ্চিত অর্থ ফেরত দেয়া হবে। সংস্থাটির কার্যক্রম শুরু থেকে ২বৎসর পর ৪হাজার ৮০০টাকা হারে ২হাজার ১৫০কার্ডধারীর মোট ১ কোটি ৩২ লাখ টাকা জমা হওয়ার কথা। ওই সংস্থার কার্য শুরুর ১ বৎসর না যেতেই কাঙ্খিত অর্থ ব্যাংক হিসাবে না পাওয়ায় মহিলা বিষয়ক দপ্তর তাদের সঞ্চয় উত্তোলন বন্ধ করে দেয়। ওই সময় পর্যন্ত ২,১৫০ সুবিধাভোগীর জমা বহির জের অনুযায়ী ব্যাংক হিসাবে ২৬ লাখ টাকা থাকার কথা থাকলেও সংস্থাটির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ১১ লাখ টাকা জমা করেছে। বিষয়টিতে সন্দেহ দেখা দেয়ায় মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা ২,১৫০ সুবিধাভোগীর জমা বহি নিজ দপ্তরে নিয়ে হিসাব করলে হিসাব অনুযায়ী সুবিধাভোগীদের সঞ্চিত অর্থের পরিমান দাড়ায় ২৬লাখ টাকায়। অথচ ব্যাংক হিসাবে দেখা যায় জমা হয়েছে মাত্র ১১লাখ টাকা। বাকি প্রায় ১৫লাখ টাকা সংস্থাটি আত্মসাত করার লক্ষে হাতে রেখেছে।
সুবিধাভোগী,ইউপি চেয়ারম্যান ও মহিলা বিষয়ক দপ্তরের পক্ষ থেকে বার বার যোগাযোগ করা হলেও গত ৭মাসেও সংস্থাটি দুস্থদের গচ্ছিত টাকা ফেরত দেয়নি। জেলার রাজারহাট এলাকার অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আঃ খালেক বলেন, আমি গরীব মানুষের একটি টাকাও আত্মসাত করব না, আগামী রোববার হতে নিজে থেকে টাকাটা ব্যাংকে জমা করবো।
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সখিনা খাতুন জানান, ভিজিডিভোগী দুস্থ্য ২হাজার ১৫০ মহিলার প্রায় ১৫লাখ টাকা, গত ৭মাস থেকে দেই-দিচ্ছি করে তালবাহানা করে আসছেন অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আঃ খালেক। তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আগামী রোববার টাকা ব্যাংকে জমা দিবেন মর্মে জানিয়ে আসছেন,কিন্তু টাকা দিচ্ছেন না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ শামসুজ্জোহা বলেন, বিষয়টি অবগত হওয়ার পর থেকে অগ্রযাত্রা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আঃ খালেক এর সাথে বহুবার যোগযোগ করেও টাকা দেয়নি। তার সাথে পুঃন যোগাযোগ করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।