রোহিঙ্গারা যাতে নিরাপদে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে সেজন্য আঞ্চলিক ফোরাম আসিয়ানভুক্ত দেশগুলোর সহযোগিতা কামনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন। শুক্রবার থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে আসিয়ানের ২৬তম আঞ্চলিক ফোরামে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, থাইল্যান্ডের সভাপতিত্বে ফোরামে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীন ও ভারতসহ ২৬টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন। সেখানে দেওয়া বক্তব্যে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত থাকলে তা পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।’ তিনি উত্তর রাখাইনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ও তাদের জন্য বাসযোগ্য পরিবেশ তৈরি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বিশেষ করে আসিয়ানের সার্বিক ভূমিকা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ অনির্দিষ্টকালের জন্য রোহিঙ্গাদের ভার বহনের মতো অবস্থায় নেই। এ সমস্যার সমাধান বৈশ্বিক দায়বদ্ধতা হওয়া উচিত।’
ফোরামে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, নিউজিল্যান্ড ও মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমারে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে দেশটির প্রতি আহ্বান জানান। আসিয়ানভুক্ত অন্যান্য দেশগুলোকেও এ প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। সভায় যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও মালয়েশিয়া রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত নৃশংসতার বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের ওপর গুরত্ব আরোপ করে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে পরমাণু অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ, জলসীমায় বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশের অবনতি, মানব পাচার, মাদক চোরাচালান, সাইবার অপরাধ বিষয়ে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এশীয় ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতার জন্য কোরীয় উপদ্বীপে শান্তিপূর্ণ পরিবেশের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
পরে ড. মোমেন কানাডা, ভারত, শ্রীলঙ্কা ও ভিয়েতনামের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন। এসব বৈঠকে তিনি নিজের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানান।