কুড়িগ্রামের রাজারহাটে রাক্ষুসী তিস্তার কড়াল গ্রাসে তিনটি ইউনিয়নের শতাধিক পরিবারের বসতভিটা ও ফসলী জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এসব পরিবারের সদস্যরা নানা কষ্টে যত্রতত্র দিনাতিপাত করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা,কালিরহাট,হংসধর,তৈয়বখাঁ,
এদিকে প্রতিবছর তিস্তা নদী ভাঙ্গনে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের মানচিত্র বদলে গেছে। বিগত এক যুগে রাক্ষুসে তিস্তা কেড়ে নিয়েছে উপজেলার বিদ্যানন্দ,ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ও ইউনিয়নের চার হাজারেরও বেশী পরিবারের ঘরবাড়ি,বসত ভিটা ও ফসলী জমি। সর্বশান্ত এসব পরিবারের অনেকেই আজ পর্যন্ত মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। ফলে তিস্তা পাড়ের সর্বহারা মানুষ গুলোর নানা কষ্টে দিন কাটছে ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিগত এক যুগে রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাংরারহাট,গাবুরহেলান,পাড়ামৌলা,
উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঁঙ্গা ইউনিয়নের নদী ভাঁঙ্গন কবলিত গ্রাম গুলোতে ঘুরে ভাঁঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলোর দুঃখ দূর্দশার নানা চিত্র পাওয়া গেছে। তৈয়বখাঁ মৌজার বিধবা সোনাবালা (৯০) বলেন, একদিন হ্যামার সউগ ছিল,নদী ভাঙ্গনে সউগ শ্যাষ হয়য়া গেইছে। এলা হ্যামার মাথা গুজবেরও ঠাঁই নাই,দয়া করি মাইসে (মানুষ) তার বারান্দাত থাকপের দিছে। একই মৌজার বিধবা রতনেশ্বরী (৮০) জানান, নদী ভাঙ্গন হ্যামাক শ্যাষ করছে ,হ্যামরা এলা রাস্তার মাটিত ঘর তুলি আছি,কাম কাজ নাই,খাওয়াও নাই,মাইসে যতখ্যানে এক মুট দেয়। আঃ ছালাম (৬০) জানান, নদী তো সউগ নিয়্যা গেইছে,এলা ছাওয়া পোওয়া গুলাক নিয়্যা কষ্টোত আছং।
তৈয়বখাঁ মৌজার ইউ,পি সদস্য মনিন্দ্র নাথ জানান,এই মৌজায় গত এক যুগে ভাঙ্গনের শিকার শতশত পরিবার যাদের নিজের বলতে কিছু নেই,তারা অন্যের জমি ভাড়া নিয়ে ,কিংবা রাস্তার ধারে কোন রকম মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নিয়েছে।
উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন চেয়ারম্যান তাইজুল ইসলাম জানান,এক যুগে নদী ভাঙ্গন বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের মানচিত্র বদলে গেছে,এই ইউনিয়নের প্রায় অর্ধেকাংশই নদী গর্ভে চলে গেছে।
নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষরা তিস্তার ভাঁঙ্গন রোঁধে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদী গর্ভে বিলীন! **
এম এ কে লিমন (বিশেষ)প্রতিনিধিঃ