জসিম উদ্দিন, নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে ভুল চিকিৎসায় আমান্তিকা নামের এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় এক ক্লিনিকে ভাংচুর করেছে বিক্ষুব্ধ স্বজনরা।
সোমবার দুপুরে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ’সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতাল’ নামের একটি ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ পালিয়ে গেছে। জানা গেছে, উপজেলার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের বড় সাদিপুর গ্রামের পিন্টু মিয়ার গর্ভবতী স্ত্রী আমান্তিকাকে চিকিৎসার জন্য শুক্রবার বিকেলে মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকার সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক ডা. নূরজাহান বেগম ওইদিন রোগীকে সিজার করার পরামর্শ দেন। তিনি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে আমান্তিকার সিজার করেন। এসময় আমান্তিকার একটি কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। সিজারের পর ওই রোগীর পেটে গজ কাপড় রেখেই ডা. নূরজাহান কাটা স্থান সেলাই করে দেন। সিজারের পর রোগীর অনবরত বমি ও পেটে অস্বস্তি তৈরি হয়ে পেট ফুলে যায়। পুনরায় ওই ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসলে তিনি নারায়ণগঞ্জ কেয়ার হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। ডাক্তার নূরজাহান কেয়ার হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় ওই রোগীর সিজার করিয়ে জরায়ু কেটে ফেলেন। রোগীর অবস্থার অবনতি হলে কেয়ার হাসপাতাল থেকে তাকে ঢাকার গেন্ডারিয়া আজগর আলী হাসপাতালে পাঠানো হয়। সোমবার ভোরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রোগীর স্বজনরা বিক্ষুব্ধ হয়ে দুপুরে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে এসে ক্লিনিকের পরীক্ষাগার, মেশিনপত্র, গ্লাস, দরজা জানালাসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ভাংচুর করে। ঘটনার পর ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে স্বজনদের বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। নিহত আমান্তিকার স্বামী মো. পিন্টু মিয়া জানান, ভুল চিকিৎসায় তিনদিনের মাথায় তার মেয়ে এতিম হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের তিনি বিচার দাবি করেন। নিহতের বাবা সোহেল মিয়া জানান, শুক্রবার আমার মেয়েকে সোনারগাঁ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পর ডাক্তার সিজার করার পরামর্শ দেন। জরুরি সিজার না করলে মা ও পেটের সন্তান মারা যাবে বলে জানিয়েছিলেন। ডাক্তারের কথা অনুযায়ী আমরা সিজারের সিদ্ধান্ত নিই। ওইদিন ডাক্তার নূরজাহান আরও চারটি সিজার করেছেন। পাশাপাশি রোগীর দীর্ঘ লাইন ছিল। ডাক্তার তাড়াহুড়া করে সিজারের পর পেটে গজ কাপড় রেখে সেলাই করায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীকে গ্রেফতার করে বিচার দাবি করছি।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় হাসপাতাল ভাংচুর হয়েছে। বিক্ষুব্ধ স্বজনদের পুলিশ বিচারের আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।