
দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার স্বার্থে অবিলম্বে রোহিঙ্গা সমস্যার আন্তর্জাতিক সমাধানের দাবি জানিয়েছেন দেশি-বিদেশি বিশিষ্টজনরা। তারা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার যদি আন্তর্জাতিকভাবে সমাধান না হয় তাহলে এ অঞ্চলে শিগগিরই বিভিন্ন অন্তর্ঘাতমূলক জঙ্গি ও মৌলবাদী কর্মকাণ্ড শুরু হবে। যা থেকে ভারত, বাংলাদেশসহ পার্শ্ববর্তী কোনো দেশ বাদ পড়বে না।
শুক্রবার রাজধানীর বাংলা একাডেমী মিলনায়তনে ‘১৯৯৭১ : গণহত্যা বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী দিনে বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন। সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের আওতায় তৃতীয়বারের মতো দেশে দুইদিনব্যাপী ‘১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট্র’ এই সম্মেলন আয়োজন করে। বিশিষ্টজনদের মতে, মুক্তিযুদ্ধের সময় বাঙালি জাতির ওপর সংগঠিত পাকিস্তানি বাহিনীর নৃংশস গণহত্যার বিচার হলে মিয়ানমার সরকার কখনও রোহিঙ্গা গণহত্যা ঘটানোর সাহস পেতো না।
এবারের সম্মেলনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণহত্যা বিষয়ে ইতালি, কম্বোডিয়া, তুরস্ক, মিয়ানমার, যুক্তরাজ্য, ভারতের ১৭ জনসহ বাংলাদেশের শাতাধিক গবেষক অংশ নেন। শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর বাংলা একাডেমীর পৃথক মিলনায়তনে ছয়টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার একই মিলনায়তনে সম্মেলনের সমাপনী অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। একাত্তরের রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা লে. কর্নেল (অব) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীর প্রতীক এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজক কমিটির আহবায়ক চিত্রশিল্পী হাশেম খান। সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ভারতের বিশিষ্ট সাংবাদিক হিরন্ময় কার্লেকার। উদ্বোধনী পর্বে সভাপতিত্ব করেন ১৯৭১ গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘরের ট্রাস্টের সভপতি অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে গণহত্যা ও নির্যাতনের বিভৎস চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, একাত্তরে খুব কাছ থেকে গণহত্যা দেখেছি। ব্রহ্মপুত্র নদের সুন্দরী ডোবায় শত শত মৃতদেহ আটকে থাকতো। যাদের জন্য এই দেশ তাদেরকে যদি স্মরণ না রাখতে পারি, তাহলে সব বৃথা হয়ে যাবে।