
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানায় এএসআই জুয়েল হোসেইনকে আরো কিছুদিন দেখতে চান উপজেলার সচেতন মহল। অতি সম্প্রতি তিনি নীলফামারী জেলা পুলিশ এ বদলী হয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে। উলিপুর পৌর এলাকােয় মাদক বিক্রি ও সেবীদের তৎপরতা আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুর থানায় এ এস আই জুয়েল কর্মরত থাকাকালীন উলিপুর পৌর এলাকা সহ বুড়াবুড়ী, দূর্গাপুর তবকপুর ধামশ্রেনীতে নজরদারীতে ধরপাকড়ের কারণে কমে এসেছিল মাদক বিক্রী ও সেবনকারীদের তৎপরতা। এছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ও মাদকসেবীদের কাছে এএসআই জুয়েল মুর্তিমান আতঙ্ক। ২২/০২/২০১৭ সালে তিনি সর্বপ্রথম কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর থানায় সহকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক হিসেবে য়োগদান করেন। উপজেলার উলিপুর থানায় এসে উলিপুর পৌর এলাকার দায়িত্ব প্রাপ্ত পুলিশ অফিসার হিসেবে কাজ শুরু করেন। অল্প সময়ের মধ্যেই মাদক, জুয়া ও সন্ত্রাস বিরোধী অভিযান চালিয়ে পৌর এলাকাকে মাদকমুক্ত করেন। সাধারণ মানুষজনের মাঝে ফিরে আসে স্বস্থি। এ সময় উলিপুর পৌরবাসী এ এসআই জুয়েল কে মাদক বিরোধী অভিযানে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেন।ফলে ধীরে ধীরে কমতে থাকে পৌর এলাকায় জুয়া, সন্ত্রাস ও মাদকসেবীদের কর্মকান্ড। উলিপুর বনিক সমিতির সভাপতি ও পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি বর্ষীয়ান আওয়ামীলীগ নেতা সৌমেন্দ্রনাথ প্রসাদ পান্ডে গবা উলিপুর থানার এ এস আই জুয়েল হোসেইন সম্পর্কে এ প্রতিবেদককে জানান, জুয়েল উলিপুর থানায় যোগদান করার পর মাদক জুয়া অনেকটা নিয়ন্ত্রনে চলে আসে।
তার যোগদানের পর থেকে এএসআই জুয়েল মাদক নিয়ন্ত্রন ও প্রতিরোধে কাজ করে আসায় বিশাল আয়োতনের পৌরএলাকার প্রত্যেকটি স্পট ও মাদক সেবন এবং ব্যাবসায়ীদের বিষয়ে যথেষ্ট তথ্য ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল আছেন। উলিপুর থানায় কর্মরত তার সিনিয়র পুলিশ অফিসার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক এস আই বলেন জুয়েল ছিলো ৬ ফিট লম্বা একজন স্মার্ট দক্ষ পুলিশ সদস্য। পৌরসভার বাইরেও মাদক অভিযানে সে ছিলো আমাদের একজন চৌকস চতুর ও সাহসী নেতৃত্বদানকারী পুলিশ অফিসার। তিনি আরো বলেন সরকারী চাকুরী বিশেষত পুলিশ,বিভাগে শৃংখলা একটি গুরুত্বপুর্ন বিষয় এবং বদলী আমাদের নিত্যনৈমিত্তিক একটা সার্ভিস জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। একে ফলো করা আমাদের দায়িত্ব। যেহেতু থানায় পুরাতন অফিসারের সংখ্যা কমে আসলো ফলে মাদক তথ্য সংগ্রহ ও অভিযানে একটু হিমশিম খেতে হবে। তারমত জানাশোনা তেমন আর কেউ রইলোনা।
এএসআই জুয়েলের বেশকয়েকটি বড় ও চাঞ্চলকর মাদক অভিযানের কথা এখনও জনশ্রুতি রয়েছে। অতিনিকটে গত ২৭/১১/১৯ ইং দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ১২ মামলার আসামী কুখ্যাত মাদকব্যবসায়ী আসিফ ইকবাল ওরফে শামীমকে দুর্গাপুর এলাকার গোড়াই মোরে হিরোইন ও ইয়াবাসহ হাতেনাতে আটক করে। এসময় এএসআই জুয়েল ও সঙ্গীয় এএসআই সন্জয় আসামীর ধারালো ছুরির সামনে পরেন এবং জীবন বাজি রেখে ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার পরও এ আসামীকে মাদক সহ আটক করেন।
পৌরসভার মাদকবিরোধী অভিযানে আর একটি বড় সাফল্য গত ৮ মাস পুর্বে উলিপুর পৌরসভার সদর ৬ নং ওয়ার্ডের কমিশনার আবুল কাশেমের ছেলে স্ত্রী সহ বিপুল পরিমান ফেনসিডিল ও ইয়াবা উদ্ধার হয়। ঐ একই দিনে শহরের আর একজন বড় মাদক কারবারী রয়েলকেও প্রায় অর্ধশতাধিক ফেনসিডিল ও ইয়াবাসহ আটক করে মাদকের লাগাম টেনে ধরেন। এ ঘটনায় সদর ওয়ার্ড কমিশনার আবুল কাশেমও মাদকব্যবসায়ীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় তাকেও এই মাদক মামলার আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
এছারা গত ২০১৮ সালে পুলিশ কমিউনিটি ও উলিপুর পৌরসভার সদর ওয়ার্ড কমিশনার এর সহায়তায় মাদক ব্যাবসায়ীদের তালিকা প্রনয়ন করা হয়, যদিও ঐ তালিকায় বেশকজন সাধারন ব্যাবসায়ী, সাংবাদিক, শিক্ষকসহ বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের নাম যাচাইবাছাই ছারা ষড়যন্ত্রমুলক ভাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্তকরনের অভিযোগও উঠে। তবে এই সংখ্যা খুবই সামান্য, তাছারা তথ্যভিত্তিক ও মাদক মামলায় সম্পৃক্ত এমনদের নাম চলে আসায় তারাও মাদক বিষয়ে নিয়ন্ত্রন আনতে বাধ্য হয়।
সদর কমিশনার ও পুলিশ কমিউনিটি নেতা আবুল কাশেম পরবর্তী সময়ে তার বাড়িতেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে দিনেদুপুরে প্রচুর পরিমান মাদক উদ্ধার ও কমিশনার সহ স্ত্রী পুত্রের বিরুদ্ধে মাদক রাখা ও ব্যাবসার অভিযোগে তারা আটক হলেও কমিশনার পালিয়ে যায়। এমন মাদক সম্রাট ও পুলিশ কমিউনিটিতে রাজনৈতিক বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের প্রভাবে ভুলবশতঃ ২/৪ টি নাম তালিকায় আসাটা অমুলক নয় বলে জানিয়েছিলেন তৎকালীন তালিকা প্রণয়নকারীর দায়িত্বে থাকা এস আই আতাউর রহমান ও এএসআই জুয়েল সরকার।
এএসআই জুয়েল একজন ভালো দক্ষ চৌকস পুলিশ অফিসার হিসেবে যথেষ্ট সুনাম থাকার পরও তালিকায় অন্যদের দারা প্ররোচিত হয়ে কিংবা ভুলবশতঃ এমন ঘটনা মারাত্মক অপমানজনক ও অন্যায় এ বিষয়ে প্রতিবেদক সবমিলিয়ে এটারও বক্তব্য চাইলে তিনি বলেন, ২০১৭ সালের শেষ দিকে পুলিশ কমিউনিটি, স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার ও পুলিশদের সমন্বয়ে খুবগুরুত্বদিয়ে মাদকসংশ্লিষ্ট তালিকা প্রনয়ন করা হয়। পরবর্তী সময় একটি দিন ধার্য্য করে মাইকিং করে এবং মাদক তালিকা ধরে সকলকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে ও মাদককে না, ক্যাম্পেইন উলিপুর বনিক সমিতি কার্যালয়ে জনাকীর্ণ পরিবেশে প্রোগ্রাম করা হয়।
পরবর্তী সময়ে উলিপুরের স্থানীয় এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে প্রাক্তন চেয়ারম্যান একই পরিবারে দুই সহোদর হওয়ায় তাদের একজনের সন্তান ( মানসিক চিকিৎসারত) মাদকবিরোধী এক অভিযানে স্বন্ধ্যারপর টিনএজ অনেক ছেলেদের আড্ডায় ধৃত হয়। অন্যান্যদের সাথে গাজা সেবনের অভিযোগে সেও আসামী হয়ে জেল হাজতে যায়। যতদুর সম্ভব ঐ তালিকা প্রনয়নের সময় কমিটির এক বা অধিক ব্যাক্তিবর্গ বিরোধীতা বা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই ঐ পরিবারের আর এক সাবেক চেয়ারম্যানের বড় ছেলে সমাজকর্নী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক এক ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করলেও বাবার নাম হিসেবে চাচার নাম ব্যবহার করে। যা পরবর্তী সনয় আমাদের দৃষ্টিগোচর ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রতিবাদ আসলেও এর আইনগত কোন জটিলতা না থাকলেও সামাজিক সুরিবারে প্রাক্তন চেয়ারম্যান একই পরিবারে দুই সহোদর হওয়ায় তাদের একজনের সন্তান ( মানসিক চিকিৎসারত) মাদকবিরোধী এক অভিযানে স্বন্ধ্যারপর টিনএজ অনেক ছেলেদের আড্ডায় ধৃত হয়। অন্যান্যদের সাথে গাজা সেবনের অভিযোগে সেও আসামী হয়ে জেল হাজতে যায়। যতদুর সম্ভব ঐ তালিকা প্রনয়নের সময় কমিটির এক বা অধিক ব্যাক্তিবর্গ বিরোধীতা বা সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতেই ঐ পরিবারের আর এক সাবেক চেয়ারম্যানের বড় ছেলে সমাজকর্নী ও বিশিষ্ট সাংবাদিক এক ভাইয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করলেও বাবার নাম হিসেবে চাচার নাম ব্যবহার করে। যা পরবর্তী সনয় আমাদের দৃষ্টিগোচর ও বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রতিবাদ আসলেও এর আইনগত কোন জটিলতা না থাকলেও সামাজিক সুনাম নষ্টে এটা প্রচারনা পায়। সে সময় আমি নিজেও নতুন ছিলাম অনেককেই সেভাবে সে নজরে চিনি নাই। তৎকালীন ওসি মহোদয়কে বিষয়টা মৌখিক ভাবে জানানো হয়,।
কলেজ ছাত্র রায়হান কবির জানান, এই অবস্থার পরিবর্তন আনতে এএসআই জুয়েল নিয়মিত উঠতি তরুন যুবকদের সাথে নিয়ে খেলাধুলা করতেন এবং মাঠে এসে খোজখবর রাখতেন। সাংবাদিক আশিকুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, জুয়েল একজন মিডিয়াবান্ধব ও খেলাধুলা সংগঠকের ভুমিকাও পালন করতে দেখা গেছে। তারই একান্ত প্রচেষ্ঠায় হারিয়ে যাওয়া উলিপুরের গৌরবজ্জল ভলি বলকে ও এর খেলোয়ারদের সংগ্রহ করে নিজের অর্থে মাঠ সংস্কার, বল নেট সব কিছুর ব্যাবস্থা করে রীতিমত একটি ভলি টিম তৈরি করেছিলেন। গতকাল বিকেলে উলিপুর কাচারী ভলিবল মাঠে এএসআই জুয়েলের বদলীর খবরে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ১৫/১৭ বছরের তরুন ছেলেরা আবেগআপ্লুত কন্ঠে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস নিয়ে প্রতিবেদককে বলে, জুয়েল আংকেল আমাদের ভলিবল প্রাকটিস করায় ও খুব সুন্দর করে আমাদের সাথে থেকে কোচের ও অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করে আসছে। আবু ফারহান রিময়, মৃদুল সহ সকলে বলে আমাদের কুড়িগ্রাম এস পি আংকেল খুব ভালো এবং শিশু তরুন বান্ধব আংকেল। আমরা জুয়েল আংকেলকে এখনেই যেতে দিবনা, আমাদের খেলা দেখানোর কেউ থাকবেনা। শ্রদ্ধেয় এসপি আংকেল আমাদের আবেদন ফিরিয়ে দিবেন না। আমরা উ্লিপুর ওসি আংকেলকেও অনুরোধ করবো উনি যেন বড় আংকেল ( এসপি) কে আমাদের হয়ে বুঝিয়ে বলে খেলার এ শীতের সিজনটা রাখেন।