
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে অবস্থিত শহীদ মিনারটির বেহাল দশা। অবহেলা অযত্নে দাঁড়িয়ে আছে ১ যুগ ধরে। ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় না শহীদদের। শহীদ মিনার ভাষা শহীদদের আত্ম ত্যাগের স্মৃতির স্মারক ও শহীদদের প্রতি সম্মান জানানোর স্থান। অথচ শহীদ মিনারটির চারপাশে আবর্জনায় সয়লাব। শহীদ মিনারটি সারা বছরই অহেলা অরক্ষিত থাকে। রাত হলেই বসে এলাকার যুবক ছেলেদের গাঁজার আসর। শহীদ মিনারেও বসে মাদকসেবন ও চলে গানের আড্ডা এসব যেন দেখার কেউ নেই ।
এলাকার বাসিন্দা মামুন, মাহবুব, জনি তরুনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শহীদ মিনারটি তৈরীর পরে শুধুমাত্র একবার থেকে দু‘বার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হয়। তারপর থেকে আর শ্রদ্ধা জানানো হয় না তবে আজ নামমাত্র ফুল ছিটিয়ে রেখেছে।
সরকার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার স্থাপন বাধ্যতামুলক করলেও এখনো অনেক প্রতিষ্ঠানে নির্মাণ হয়নি শহীদ মিনার। আবার কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার দায়সারা স্থাপন করা হলেও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নেই কর্তৃপক্ষের জরাজীর্ন অবস্থায় রয়েছে বছরের পর বছর।
স্থানীয় বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা রিয়াজুল হক সরদার বলেন, শহীদ মিনারটিতে ফুল দেয়া হয় না এটা সম্পুর্ন সভাপতির গাফিলতির কারণে। প্রধান শিক্ষকতো এ ব্যাপারে কোনদিনও বলে না, সভাপতি যেভাবে চালায় সে সেভাবেই চলে। আমি আজও সবার সাথে রাগ করে আসি। আমার রাগে আইজ নামমাত্র ফুল ছিটানো হয়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক আশরাফুল ইসলামকে দুপুর ১ টায় ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি এইমাত্র ফুল ছিটিয়ে আসলাম। এখনো রাস্তায় আছি।
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আইয়ুব আলী সরদার বলেন, শহীদ মিনারটি অনেক দিন থেকেই জরাজীর্ন অবস্থায় আছে। এত দিন এ নিয়ে তো ভাবি নাই, তবে এখন আমি খুব শীঘ্রই আমাদের স্কুল কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের সাথে বসে আমরা শহীদ মিনারটি ঠিক করব। এখন থেকে আর এমন ভুল হবে না।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ, ডব্লিউ, এম রায়হান শাহ্ বলেন, শহীদ মিনারে ফুল দেয়া হয় না বিষয়টি আমার কাছে অজানা। তবে এখন আমরা ঐ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিব কেন তারা এমনটি করছেন।
কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও উদাসীনতার কারণে এবং সংরক্ষণ ও সংস্কারের অভাবে বিলুপ্তির পথে রাণীগঞ্জ বাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটি। বাঙালির আবেগের উৎস, বিভিন্ন লড়াই সংগ্রামের স্মৃতিস্তম্ভ শহীদ মিনার। অথচ আজ সেই শহীদ মিনারই এখন চরম অবহেলা আর অযত্নে ধুকছে।