মেয়ে খাতিজা রহমানের বোরকা পরা নিয়ে বাংলাদেশের নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের সমালোচনায় এবার মুখ খুলেছেন ভারতের জনপ্রিয় সংগীতবিদ এ আর রাহমান। তসলিমার নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেছেন, মেয়ে খাতিজা রহমান নিজের ইচ্ছেতেই বোরকা পরে। তাকে কেউ বাধ্য করেনি। খবর এনডিটিভির।
অস্কার জয়ী এই সঙ্গীতশিল্পী বলেন, ‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পোশাকের দেশ ভারত। স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে সবাই স্বাধীনভাবে খেতে-পরতে-চলতে পারেন। আমার মেয়েও তাই। তারপরেও গত একবছর ধরে ওর বোরকা পরা নিয়ে বিতর্ক চলছে। ও কিন্তু নিজের ইচ্ছেয় এই পোশাক পরে।’
মেয়ের বোরকা পরা নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের থেকেই উত্তরাধিকার সূত্রে ধর্ম-সংস্কৃতি-ঐতিহ্য পেয়েছে খাতিজা। এগুলো ওর রক্তে মেশা। ফলে, জোর করে নয়, স্ব-ইচ্ছায় খাতিজা বেছে নিয়েছে এই পোশাক। আমরা কেউ ওকে জোর করিনি। এটা বোধহয় সবাই জানেন না, বোরকা শুধু ধর্মের বা জাতির প্রতীক নয়। দেশের সংস্কৃতিরও প্রতীক। যা আমার মেয়ে নিজের ইচ্ছেতে গায়ে তুলেছে। তারপরেও কেন এটি নিয়ে এত সমালোচনা!’
প্রসঙ্গত গত ১১ ফেব্রুয়ারি তসলিমা খাতিজার একটি ছবি পোস্ট করে টুইটারে লিখেছিলেন ‘আমি এআর রহমানের মিউজিক খুব ভালোবাসি। কিন্তু যখনই তার কন্যাকে বোরকা পরে দেখি, তখনই সাফোকেটেড লাগে। সাংস্কৃতির পরিবারের একজন শিক্ষিতা নারীও খুব সহজেই মগজ ধোলাই করা যায়, এটি ভেবেই খুব হতাশ লাগে।’
জবাবে খাতিজা তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে লেখেন-এক বছরও কাটল না, ফের এই বিষয়টি ঘুরে এলো… দেশে অনেক কিছু হচ্ছে।
একজন নারী কী পরতে চান, তাকেই গুরুত্ব দেন সবাই। প্রতি বার এই ইস্যুটি সামনে এলেই অনেক কিছু বলার থাকে। আমি যা করছি, তার জন্য আমি খুশি ও গর্বিত। আর আমাকে আমার মতো করে যারা গ্রহণ করেছেন, তাদের আমার ধন্যবাদ।
আমার কাজই কথা বলবে… প্রিয় তসলিমা নাসরিন, আমার পোশাকের জন্য আপনি শ্বাসরুদ্ধ বোধ করছেন, এতে আমি দুঃখিত। অনুগ্রহ করে তাজা বাতাস নিন। কারণ আমি আদৌ সাফোকেটেড অনুভব করছি না; বরং আমি যা করছি, তার জন্য গর্বিত।
নারীবাদের প্রকৃত অর্থ কী–তা গুগুলে একবার দেখে নিন। কারণ সেখানে অন্যান্য নারীকে হেয় করা বা তাদের পিতাদের এই ইস্যুতে নিয়ে কোনো কথা বলছেন না। এ ছাড়া আপনার পর্যবেক্ষণের জন্য আমি তো আপনাকে কোনো ছবিও পাঠাইনি।’
গত বছরও রহমানের মেয়ে খাতিজার বোরকায় মুখ ঢাকা নিয়ে কথা উঠেছিল। তবে সে বার সাহসী জবাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রোলকে থামিয়ে দিয়েছিলেন রহমান স্বয়ং।