সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে একের পর এক উত্যক্তের ঘটনায় ছাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এর প্রতিবাদ করতে চাইতে গেলে হামলার শিকার হতে হচ্ছে প্রভাবশালী ওসব বখাটেদের হাতে। স্কুলের প্রধান শিক্ষক এ বিষয়ে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে না পারায় অবশেষে কোন প্রতিকার না পেয়ে বখাটে ছাত্রদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার এক ছাত্রীর বাবা ৮জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করেছে।
এতে সৈয়দপুর গ্রামের সামশাদ আলীর ছেলে স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্র আলামিন (১৪), আজতুল্লাহর ছেলে দারোগ আলী (৩৫), নায়েব আলীর ছেলে আব্দুল হান্নান (১৫), জহুরুলের ছেলে মিঠুন (১৪), রনি (১৩), সাহেব আলীর ছেলে রাসেল (১২), সোহেলের ছেলে সৌরভ (১২) ও সামচুল সরকারের ছেলে শামীম (১৪)।
জানা যায়, ২০০৬ সালে শাহজাদপুর উপজেলাধীন এনায়েতপুর থানার সৈয়দপুরে প্রতিষ্ঠিত ‘সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়’ এর বর্তমানে ৫’শ জন ছাত্রছাত্রী লেখাপড়া করছে। তবে গত বছর ধরে বিদ্যালয়টিতে ছাত্রীরা মাঝে-মাঝেই ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। বেশ কিছুদিন আগে এলাকার দশম শ্রেণির এক হিন্দু ছাত্রী নায়েব আলীর ছেলে হান্নান দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয়েছিল। সংখ্যালঘু হওয়ায় বিষয়টি তখন ধামাচাপা দেয়া হয়। এ কারণে স্কুলে পড়ুয়া ওসব ইভটিজাররা আরো নির্ভয়ে ছাত্রীদের উত্যক্ত করতে থাকে। গত মঙ্গলবার সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে বিকেলে বাড়ি ফেরা পথে গ্রামের তাঁত শ্রমিক হোসেন আলীর মেয়ে ৭ম শ্রেণির ছাত্রীকে ৮ম শ্রেণির ছাত্র আলামিনের নেতৃত্বে অতীতের মত উপরোক্ত বখাটেরা অশ্লীল অঙ্গভঙ্গী ও কুপ্রস্তাব দেয়। তখন সে বাড়ি ফিরে বাবাকে জানায়। বিষয়টি তিনি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মাধ্যমে বখাটের বাবাকে জানালে তিনি আমলে নেননি। বরং মেয়ের বাড়িতে বুধবার সকালে বখাটেরা লোকজন নিয়ে লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালিয়ে মেয়ের খালাতো ভাইকে মারধর করে। এ কারনে ইভটিজিংয়ের অভিযোগে মেয়ের বাবা হোসেন আলী বাদী হয়ে এনায়েতপুর থানায় ৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে।
এ ব্যাপারে হোসেন আলী জানান, আমার মেয়েকে দীর্ঘ দিন ধরে উত্যক্ত করে আসছিল বখাটেরা। বিষয়টি আমি তার অভিভাবক ও প্রধান শিক্ষককে জানালেও কোন প্রতিকার তো করেইনি, বরং বাড়িতে বখাটেরা হামলা করেছে। আমরা এখন পরিবার নিয়ে আতংকে আছি। আমি উত্যক্তকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই। তবে এতো কিছুর পরও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হামিদ বলেছেন, এসব ঘটনা তার জানা নেই।
বিষয়টি নিয়ে এনায়েতপুর থানার ওসি মোল্লা মাসুদ পারভেজ জানিয়েছেন, ইভটিজারদের ধরতে অভিযান চলছে। দ্রুত তাদের আটক করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে।
এ ব্যাপারে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোহাম্মদ সামচুজ্জোহা জানান, ঘটনাটি আসলেই আমাদের হতভাগ করেছে। দ্রুত উত্যক্তকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।