মাহফুজার রহমান মাহফুজ,ফুলবাড়ী(কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি :
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ এর প্রাদুর্ভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন গরু পালনকারীরা। উপজেলার প্রায় প্রতিটি বাড়িতে গরুর লাম্পি স্কীন নামে এ রোগের সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায় গরুর সমস্ত শরীরের মধ্যে ফোসকা পড়ার মত চাকা চাকা আকার ধারণ করে গরু অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোথাও একটি গরু আক্রান্ত হলে তার আশপাশের সব গরুও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
এব্যাপারে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েকজন গরু পালনকারীর সাথে কথা হলে তারা জানান, হঠাৎ করে গরুর এমন রোগ হওয়াতে আমরা আতঙ্কে আছি। তারা জানান গ্রামের পল্লী চিকিৎসক গরুর চিকিৎসা করছে।কিন্তু চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি।গরু প্রতি প্রায় দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে।গরু মারা না গেলেও সুস্থ্য হতে বেশ সময় লাগছে। এ কারণে গরু না খেয়ে অনেকটা শুকিয়ে যাচ্ছে ফলে আমরা ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি।তাছাড়া এরোগে আক্রান্ত গরু সুস্থ্য হতে যে সময় লাগে তাতে করে ঈদে আমরা গরু বাজারে তুলতে পারবো কিনা তা নিয়ে চিন্তায় আছি।ঈদের বাজারে গরু বেচতে না পারলে আমাদের বড় লোকসানের সম্মুখীন হতে হবে।
এ বিষয়ে পল্লী প্রাণী চিকিৎসক মতিউর রহমান জানান, লাম্পি স্কীন রোগটি একটি ভাইরাস জনিত রোগ। এ রোগে কোন এলাকার গরু আক্রান্ত হলে তা পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগের টীকা এখনো আবিস্কার না হলেও সময় মতো চিকিৎসা করালে গরু সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়। আমি নিজেও কয়েকটি গরুর চিকিৎসা করে ভালো করেছি।
ফুলবাড়ীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ পরিস্থিতি নিয়ে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ কৃষ্ণ মোহন হালদার বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামে যে রোগটিতে গরু আক্রান্ত হচ্ছে এতে করে আমাদের এলাকায় গরু মরে যাওয়ার নজির নেই।এ পর্যন্ত উপজেলা ২৫১টি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সময় মতো চিকিৎসা করলে এ রোগ সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ রোগ থেকে গরুকে রক্ষার জন্য প্রতিদিন বিভিন্ন জায়গায় উঠান বৈঠক করে সকলকে সচেতন করছি।
তাদের মাঝে সচেতনতা মূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।তাছাড়া চিকিৎসা সেবা প্রত্যেকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নেই ৪ সদস্যের মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি টিমের সদস্যরা নিয়মিত সেবা দিয়ে আসছে। অল্প সময়ের মধ্যে এ রোগের প্রাদুর্ভাব কাটিয়ে ওঠার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।