
মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর পৌরসভা নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা। এ প্রচারণায় পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আলহাজ্ব মাও: হুমায়ূন কবির নূরী তার নির্বাচনী প্রচারণার প্রধান মাধ্যম পোষ্টারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার ছবি ব্যবহার করে ও ওয়ার্ডে একাধিক নির্বাচনি ক্যাম্প তৈরী করে চায়ের আড্ডা বসিয়ে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিদ্বন্দ্বী সাধারণ কাউন্সিলর পদপ্রার্থী আলহাজ্ব মাও: হুমায়ুন কবির নূরী স্থানীয় শাহজালাল অফসেট প্রিন্টিং প্রেস থেকে মুদ্রিত তার নির্বাচনী প্রচারণা পোষ্টারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকার ছবি ব্যবহার করেছে। এছাড়া ওই প্রার্থী ২নং ওয়ার্ডের বেপারীপাড়া গ্রামে আব্দুল হাসিম মাষ্টারের বাড়ি প্রাঙ্গণ, আক্কেল আলী মিয়ার বাড়ি প্রাঙ্গণ ও আল আমিন মিয়ার বাড়ির প্রাঙ্গণে মোট তিনটি নির্বাচনী ক্যাম্প তৈয়ারী করে চায়ের আড্ডা বসিয়ে নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে এলাকায় বিভ্রান্তির সৃষ্টি করে আসছে।
নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ২০১৫ সালের ২৩ নভেম্বরের প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, পৌরসভা নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ৮নং ক্রমিকের (৫) নং প্যারায় উল্লেখ আছে যে, নির্বাচনি প্রচারণায় কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিজ ছবি ও প্রতীক ব্যতীত অন্য কাহারো নাম, ছবি বা প্রতীক ছাপাইতে কিংবা ব্যবহার করিতে পারিবেন না। এছাড়া, ১২ নং ক্রমিকের (৩) নং প্যারায় উল্লেখ আছে যে, কাউন্সিলর পদে প্রতীদ্বন্দ্বী কোন প্রার্থী ১(এক) এর অধিক নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিস স্থাপন করিতে পারিবেন না। কিন্তু ওই প্রার্থী আলহাজ্ব মাও: হুমায়ুন কবির নূরী উপরোক্ত নিয়ম অমান্য করে প্রচার প্রচারণা চালিয়ে আসছে।
এ ব্যাপারে ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী আলহাজ্ব মাও: হুমায়ূন কবিরের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার নির্বাচনি পোষ্টারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কার ছবি ব্যবহার করার কথা স্বীকার করে বলেন, এখন কি করা যেতে পারে?
এ ব্যাপারে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কোন কাউন্সিলর প্রার্থীর পোষ্টারে নিজ নামে বরাদ্দকৃত মার্কা ছাড়া অন্যকোন মার্কার ছবি ব্যবহার করতে পারবেন না। কিন্তু হুমায়ূন কবির তার নির্বাচনি পোষ্টারে নৌকা মার্কার ছবি ব্যবহার করে নির্বাচন আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রয়েছেন।
এলাকাবাসী জানান, কুলিয়ারচর পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে গত ২৪ ডিসেম্বর বিকালে আওয়ামী লীগ কর্তৃক নির্বাচনী এক আলোচনা সভায় ২নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী আলহাজ্ব মাও: হুমায়ূন কবির নূরী তার বক্তব্যে বলেন, জননেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যে স্বপ্নে আমাদের দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়েছেন, উপহার দিয়েছেন, আমাদের যে দেশনেত্রী বেগম শেখ হাসিনা যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গডেছেন এটা আদর্শবান হয়ে আমরা আমাদের কুলিয়ারচর পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মার্কায় প্রতীকে একশশতাংশ জয়যুক্ত হয়ে আমরা ২নং ওয়ার্ডের পক্ষ থেকে নৌকা প্রতীকে উপহার দিতে পারি। এ বক্তব্য দিয়ে তিনি সকলের কাছ থেকে বিদায় নেন। এ বক্তব্যের ভিডিও এলাকায় ভাইরাল হওয়ার পর আলহাজ্ব মাও: হুমায়ুন কবির নূরীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয় আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতাকর্মী। এর পর থেকে এলাকায় বিভিন্ন মন্তব্য করতে থাকে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে।