
আতাউর রহমান বিপ্লবঃ
কুড়িগ্রামে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় ৪০ দিনের কর্ম সৃজন কর্মসূচির অনুকূলে বরাদ্দকৃত প্রায় কুটি টাকা ফেরত গেছে। ফলে কর্মসূচীর সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে কয়েক হাজার শ্রমজীবী, হতদরিদ্র মানুষ ।
বাংলাদেশের মধ্যে একটি হতদরিদ্র জেলা কুড়িগ্রাম । ছয় দফা বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে শ্রমিক সহ হতদরিদ্রদের জন্য এই কর্মসূচি গ্রহন করে সরকার । প্রকল্প সংশ্লিষ্ট, চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের গাফিলতি ও খামখেয়ালিপনার কারণে সরকারের নেয়া এই কর্মসূচীর সুফল থেকে বঞ্চিত হয়েছে হতদরিদ্ররা। নীতিমালার দোহাই এবং
খামখেয়ালিপনার কারণে এই টাকা ফেরত গেছে সেই ব্যাক্তিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন সুবিধা বঞ্চিত শ্রমিক ও জেলার সচেতন মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নের মধ্যে ঘোগাদহ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণে ৪০ দিনের কর্মসূচির পুরো ৩২ লক্ষ ৮ হাজার টাকা ফেরত গেছে । এছাড়াও কাঁঠালবাড়ীতে ৫ দিনের ৪ লাখ ৭৩ হাজার, হোলোখানায় ৫ দিনের ৫ লাখ ৩ হাজার , ভোগডাঙ্গায় ২ দিনের ২ লাখ ৪৫ হাজার ২ শত টাকা, বেলগাছায় ৫ দিনের ৩ লাখ ১৬ হাজার, মোগলবাসায় ১০ দিনের ৬ লাখ ৪০ হাজার, পাচগাছি ইউনিয়নে ৫ দিনের ৩ লাখ ৮১ হাজার, যাত্রাপুরে ৫ দিনে ৬ লাখ ২১ হাজার এবং ঘোগাদহ ইউনিয়নের ৪০ দিনের পুরো ৩২ লাখ ৮ হাজার সহ মোট ৬৩ লাখ ৮৭ হাজার ২০০শত টাকা ফেরত গেছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগ।। এনিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা। বেলগাছা ইউনিয়নে পাওনা মজুরির দাবিতে বিক্ষোভ করেও মজুরি পায়নি সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা ।
তালিকা ভুক্ত শ্রমিক জাহানারা, বদিয়ত, হোসেন ও মমিনা বেগম অভিযোগ করেন, আমাদের সঠিক মজুরি না দিয়ে টাকা উত্তোলন করে ভাগভাগি করে নিয়েছে সবাই।। তদন্ত করলেই সত্যতা প্রমাণিত হবে বলে জানান শ্রমিকরা । শ্রমিকদের মজুরি যারা লুটপাট করে খেয়েছে তাদের আমরা বিচার চাই।।
সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা খন্দকার ফিজানুর রহমান বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘোগাদহ ইউনিয়নে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের দ্বন্দ্বের কারণে পুরো টাকাই ফেরত গেছে। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নগুলিতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শুরু করতে না পারায় কয়েকদিনের টাকা ফেরত গেছে ।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিলুফা ইয়াসমিন জানান , সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী মেম্বার চেয়ারম্যানরা সঠিক সময়ে কাজ শুরু না করায় বরাদ্দকৃত টাকার পুরোটা খরচ করা সম্ভব হয়নি। এছাড়াও করোনা দুর্যোগসহ সময়মতো মাটি না পাওয়ার কারণ-ও উল্লেখ করেন তিনি।
সরকারের এই মহতি উদ্যোগের সফলতা থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে কুড়িগ্রাম উন্নয়ন ফোরামের আহবায়ক ও কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক খ. ম আতাউর রহমান বিপ্লব বলেন, তদন্ত মূলক দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির ব্যবস্থা নিতে না পারলে আগামীতে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্প গুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হবে না।।