মোঃ এখলাছ উদ্দিন রিয়াদ, কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলায় অপরিকল্পিত ভাবে বসতবাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে রাস্তাঘাট নির্মাণ সহ নানা কারণে খাল, বিল নদী নালা ডোবা জলাশয় গুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এসব খাল-বিল, নদী নালা , ডুবা ও জলাশয় বসবাসরত দেশি শিং ,মাগুর কৈ , পুটি , টেংরা , চাপিলা , পাবদা , টাকি সহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথে। উপজেলার গ্রাম অঞ্চল ও পৌরসভায় মাছ চাষে ,গৃহস্থালির ধোয়া- মোছা ,গোসল সহ বিভিন্ন কাজে একসময়ের পুকুর গুলো গুরুত্ব পেত। তবে সময়ের পরিক্রমায় পুকুর খাল , ডুবা ও জলাশয় অনেক স্থান বিলীন হয়ে গেছে।
উপজেলার মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বিগত কয়েক বছর পূর্বেও উপজেলার নদী-নালা, খাল-বিল জলাশয় ও প্রাচীনতম পুকুরের প্রায়ই বিলীন হয়ে গেছে। এক সময়ে এই এলাকায় মাছের অভয়ারণ্য হিসেবে পরিচিত ছিল।কিন্তু বর্তমানে খাল-বিল ,নদী- নালা ,জলাশয় অনেকটাই ভরাট হয়ে গেছে।ফলে শুষ্ক মৌসুমে দীর্ঘমেয়াদি খরা-অনাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মারাত্মকভাবে দেখা দিচ্ছে গোটা এলাকায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়,উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন একটি পৌরসভায় বসতবাড়িতে কয়েক দশক আগেও অজস্র পুকুর ছিল। এখন এগুলোর অধিকাংশই নেই। গ্রামাঞ্চলে খাল-বিল ,জলাশয় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিল। পানি শুকিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে দেশীয় নানা প্রজাতির মাছ আহরণে কৃষক ও জেলেরা ব্যস্ত সময় পার করেছে। বর্তমানে সে দৃশ্য সচরাচর চোখে পড়ে না। খাল-বিল, নদী-নালা জলাশয় ক্রমান্বয়ে ভরাট হয়ে কোনটি অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে। কোনটি থাকলেও তা অর্ধমৃত।ফলে গ্রামীণ প্রাকৃতিক পরিবেশ ও ভারসাম্য বিনষ্ট হয়েই চলেছে।অপরিকল্পিত গৃহায়ণ এর কারণে গ্রামের খাল-বিল ,জলাশয় গুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় দেশীয় মাছ হারিয়ে যাচ্ছে। গ্রামে খাল-বিল জলাশয় ছাড়াও অনেকের বাড়িতে পুকুর থাকলে তা সংস্কারহীন হয়ে পড়েছে।
চরকাটিহার গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম ও হযরত আলী বলেন, ১০-১৫ বছর আগেও পুকুর ছাড়াও বর্ষা মৌসুমে ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী ও পানানবিল, বিলচাতল সহ বিভিন্ন জলাশয়ে খাঁচাভর্তি শিং ,মাগুর ,কৈ ,পাবদা ,টাকি সহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। পুকুর নদী-নালা খাল-বিল ও ডুবাই প্রচুর মাছ ধরে বিক্রি করে বাড়তি উপার্জন যুগা তো বলেও তারা জানান।
ডিপ্রেশন গ্রামের প্রবীণ টুনু মুন্সি (৯৫) বলেন, এক সময় খাল-বিল ও জলাশয় প্রচুর দেশীয় মাছ পাওয়া যেত। নদী বা নালাই গোসল করতে নামলে মাছ গুলো পায়ে ঠুকরানো শুরু করত। এখন এই সব নদী- নালায়, খাল-বিলে মাছ নেই বললেই চলে।
উপজেলার মৎস্য কর্মকর্তা কৌণিক চন্দ্র শর্মা চ্যানেল ঊনসত্তরকে জানান,পুকুর ডোবা খাল কিছুটা ভরাট হলেও কোন কোন স্থানে নতুন ভাবে পুকুর খনন হচ্ছে। তাছাড়া সরকারি উদ্যোগে নদী-নালা খাল-বিল ও জলাশয় খনন চলছে। এগুলোর মধ্য দিয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।