দেহ যথেষ্ট ইনসুলিন তৈরি করতে না পারলে বা উৎপাদিত ইনসুলিন যথাযথভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম না হলে মানুষ বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হয়। খাবার নিয়ে এই রোগীদের অনেক সতর্ক থাকতে হয়। কচি তালের শাঁস, পাকা তালের রস, অঙ্কুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা শাঁস এবং ওলকচু খাওয়ায় ভীতি রয়েছে ডায়াবেটিক রোগীদের।
তবে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শেখ শাহিনুর রহমান ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য সুখবর এনেছেন। তিনি তার গবেষণায় দেখিয়েছেন, এই খাদ্যগুলো ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী।
২০১৫ সালের জানুয়ারি থেকে গবেষণা করে তাল ও ওলকচু সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের এই সহকারী অধ্যাপক।
তার গবেষণায় উঠে এসেছে, পাকা তালের রস, কাঁচা তালের শাঁস, অঙ্কুরিত তালের আঁটির ভেতরের সাদা অংশ অথবা ওলকচুতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ ফাইটোকেমিক্যাল রয়েছে। এর কোনোটিই ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়ায় না; বরং উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনে। স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি এসব খাদ্যোপাদান পরিমিত মাত্রায় প্রয়োগ করলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে।
অধ্যাপক ড. শেখ শাহিনুর রহমান এই প্রকল্পের ওপর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন। তিনি ইঁদুরের ওপর গবেষণা চালিয়ে ভালো ফল পেয়েছেন। এতে দেখা গেছে, ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ ও পূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
এই গবেষণার স্বীকৃতিস্বরূপ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান করে। গবেষণাটির সুপারভাইজার ছিলেন অধ্যাপক ড. শেখ আবদুর রউফ। কো-সুপারভাইজার ছিলেন অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম।
গবেষক ড. শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, ‘তাল ও ওলকচু নিয়মিত পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করলে ডায়াবেটিস অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে থাকবে। ভবিষ্যতে আরও কয়েকটি উদ্ভিদজাত উপাদানের সংমিশ্রণে ডায়াবেটিস নিরাময়ে সক্ষম এমন একটি কার্যকর খাদ্য উপাদান তৈরির জন্য গবেষণা চালিয়ে যাবো। উপযুক্ত ফান্ড পেলে গবেষণার মান এবং পরিধি বাড়ানো সম্ভব হবে।’