আলমগীর হোসাইন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের উলিপুরে ধান ক্রয়ের লটারি স্বচ্ছতার সাথে বাস্তবায়ন করার অপরাধে সরকারী দলের রোষানলে পড়লেন একজন উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক। গতকাল সোমবার দুপুর ১২ টার দিকে যখন লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকদের তালিকা টাঙ্গানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ঐ খাদ্য পরিদর্শক ফজলুল হক ঠিক তখনি সরকারী দলের কতিপয় ব্যক্তি এসে তাকে তার রুমে তালা বদ্ধ করে তালিকা টাঙ্গানোর কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় ঐ অফিসে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস ছালাম।
বিষয়টি তাৎক্ষনিকভাবে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক, রংপুর বিভাগীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও মহা পরিচালককে অবহিত করেন। বেলা ৩ টার দিকে অবরুদ্ধ ফজলুল হক কে মুক্ত করে সঙ্গে নিয়ে যান কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস ছালাম। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মহিবুল হক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গত ২৪ জুন জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে তার উপস্থিতিতে এক জন ম্যাজিস্ট্রেট কৃষি বিভাগের অনুমোদিত তালিকা থেকে অত্যন্ত নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সাথে লটারির মাধ্যমে ধান ক্রয়ের জন্য ৬‘শ৩৮ জন কৃষকের নাম নির্বাচিত করেন।
জানা গেছে, প্রথম পর্যায়ে ৬৩৬ জন কৃষকের বিপরীতে ৩১৮ মেট্রিক ধান ক্রয়ের জন্য লটারি করা হয়। এরপর ২য় পর্যায়ে গত সোমবার (২৪ জুন) ৩১৯ মেট্রিকটন ধানের বিপরীতে ৬৩৮ জন কৃষককের নাম লটারীরর মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। আনুষ্ঠানিকভাবে নির্বাচিত কৃষকের তালিকা প্রকাশের পূর্বেই গোপনে একটি সিডিকেটের কাছে তালিকা সরবরাহ করার অভিযোগ উঠে খাদ্য পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। সোমবার দুপুরে উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ফজলুল হক কর্মরত অবস্থায় তাকে অবরুদ্ধ করে দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। প্রায় ৩ ঘন্টা অবরুদ্ধ থাকার পর বিকেল ৩ টার দিকে খাদ্য পরিদর্শক ফজলুল হক কে মুক্ত করা হয়।এ ঘটনায় খাদ্য বিভাগে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
চলতি বোরো মৌসুমে মাঠ পর্যায়ে কৃষকের কাছ থেকে ৬৩৭ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের জন্য লটারীর মাধ্যমে তালিকা তৈরি করা হয়। লটারিতে নির্বাচিত কৃষক জনপ্রতি ৫০০ কেজি ধানের বরাদ্দ পান। এবারে বোরোর বাম্পার ফলন হওয়ায় ৫০০ কেজি ধানের বরাদ্ধ নিয়ে কৃষদের অনাগ্রহের সুযোগে কয়েকটি সিন্ডিকেট মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা দিয়ে তাদের কৃষি কার্ড ও আইডি কার্ড সংগ্রহ করেন।
একটি সূত্র জানায়, ২য় দফায় লটারীর মাধ্যমে নির্বাচিত কৃষকের তালিকা আনষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ না করা হলেও একটি সিন্ডিকেটের কাছে তা প্রকাশ করায় বঞ্চিত সিন্ডিকেটটি বিক্ষুব্ধ হয়ে গতকাল সোমবার দুপুরে কক্ষে তালিা ঝুলিয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ফজলুল হক দাবী করেন তালিকা তৈরি করেন খাদ্য নিয়ন্ত্রক, এখানে আমার কোন সংশ্লিষ্টতা নেই।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য নিয়ন্ত্রক আব্দুস সালাম বলেন, বিক্ষুব্ধরা তালা লাগানোর পর আবার খুলে দিয়েছে। তবে তারা কৃষক কিনা তাদের আমি চিনি না।
সংগ্রহ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল কাদের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে।
উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, ঘটনাটি শুনে ওই অফিসে গিয়ে তালা খুলে দেয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে