এম এ কে লিমনঃ
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার ধর্মপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ১০ জন শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে জখম করেছেন শিক্ষক। ঘটনাটি ঘটে গত মঙ্গলবার(৯ জুলাই ২০১৯) দুপুর ১২ টার পর গণিত ক্লাস চলাকালীন সময়ে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মোস্তাক আহমেদ। তিনি ১ জুলাই ২০০৭ সাল থেকে ওই বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জানা গেছে, অভিযুক্ত ওই শিক্ষক প্রায়ই শিক্ষার্থীদের সাথে এরকম বাজে আচরণ করেন। সেদিনের ক্লাসে স্যার অংক কষতে দিলে মোট ১১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১০ জনই অংক কষতে পারে নাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই ১০ শিক্ষার্থীর পিঠে বাঁশের বেত দিয়ে বেধরক মারপিট করেন। এতে আফরোজা আক্তার খুশি(রোল-২০), ফেরদৌসি আক্তার(রোল-০৫), হাবিব মিয়া(রোল-০৮), ও লিটন মিয়া গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও মারপিটের শিকার হয়েছেন টুম্পা খাতুন, সাদিয়া খাতুন, আইনুল ইসলাম, আদম আলী।
আফরোজা আক্তার খুশির দাদা কাশেম আলী বলেন, মেয়েটির বাবা-মা ঢাকায় থাকেন। আমি এর দেখাশুনা ও লেখাপড়া করাচ্ছি। স্কুলের স্যারের মারধরের কথা আমি বা ওর দাদি জানলে রাগ করাবো সেই ভয়ে স্কুল থেকে আসার পর জামা খোলে নাই। জামায় রক্ত লাগা দেখে আমার নাতনির জামা তুলে দেখি পিঠ ফেঁটে রক্ত ঝরছে। পরে মারধরের বিষয়টি শুনে সাথে সাথে স্কুলের সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের কাছে গিয়ে জানিয়েছি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিষয়টি নিয়ে এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো মহুর্তে অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। এসময় স্থানীয় বাছের উদ্দিন(৭২), মিন্টু মিয়া(২৭), নুর মোহাম্মদ(৩২), শাহালম মিয়া(৩০), সহ সকল অভিভাবকগণ চাপা ক্ষোভের প্রকাশ করে অভিযুক্ত শিক্ষকের দ্রুত শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্ত ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তাক আহমেদের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শিক্ষার্থীরা বাড়িতেও পড়াশোনা করেনা বিদ্যালয়ে এসেও শুধু খেলাধুলা করে। ক্লাসে বেত ব্যবহারের তো কোনো নিয়ম নাই। বোর্ড নির্দেশিকা কাঠি ছিলো সেটা দিয়ে দুই একটা করে মারছি। তবে বিষয়টা যতটা নয় ততটা বাড়ানো হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাফুজার রহমান ঝন্টু জানান, শিক্ষার্থীরা আমাকে বিষয়টি অবগত করে নাই। স্কুল ছুটির পর অভিভাবকদের কাছে শুনলাম। জরুরিভিত্তিতে মিটিং করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বিদ্যালয়ের সভাপতি আব্দুস সালেক খন্দকার বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আফরোজা আক্তার খুশিকে ঔষধপত্র কেনার জন্য ডাক্তারের কাছে পাঠালাম। সকলের সাথে আলোচনা করে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ও ক্লাস্টার অফিসার হৃদয় কৃষ্ণ বর্মন জানান, তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।