কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি, পানিবন্দি মানুষের চরম দূর্ভোগ।শনিবার (১৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৬২ সেন্টিমিটার ও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।
এর ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। জেলার সবক’টি উপজেলায় নদ-নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই লাখের বেশি মানুষ।
বন্যা কবলিত এলাকাগুলোয় রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, শাক-সবজিসহ আমন বীজতলা। ঘর-বাড়ি ছেড়ে বন্যাদুর্গতরা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, গবাদিপশু নিয়ে পাকা সড়কসহ উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন। গ্রামের কাঁচা-পাকা সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছে সেখানকার যোগাযোগ ব্যবস্থা। নৌকা ও কলাগাছের ভেলাই এখন দুর্গতদের একমাত্র ভরসা।
ঐ এলাকার বাসিন্দাদের সংকট দেখা দিয়েছে শুকনো খাবারেরও।কুড়িগ্রাম সদরের হলোখানা ইউনিয়নের সারডোব, বাংটুর ঘাট, উলিপুরের চর বজরা ও রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের গাবুরহেলাল গ্রামে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে রয়েছে। সেখানে বাঁধ মেরামতে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা যায়, জেলার নয়টি উপজেলার ২৮ হাজার ১৮২টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নদীভাঙনে ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছে ৭২৫টি পরিবার।
কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. হাফিজুর রহমান জানান, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের পূর্বপ্রস্তুতি রয়েছে। ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত উপজেলাগুলোয় ৫০ মেট্রিক টন চাল, নগদ ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা বিতরণও শুরু হয়ে গেছে। এছাড়া, সাড়ে চারশ’ টন চাল ও ৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, ব্রহ্মপুত্র ও ধরলার পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের নদীগুলোর উৎসস্থলের ভারতীয় অংশে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজানের ঢলে আগামী দুই-তিনদিন পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হতে পারে।