উজান থেকে নেমে আসা ঢলে গাইবান্ধার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। আজ সোমবার নতুন করে আরও ২৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে করে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। পানিবন্দী মানুষের জন্য ৬৩টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে।সোমবার সকালে ঘাঘট নদীর পানির চাপে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের ফারাজিপাড়া এলাকায় বাঁধের দেড় শ ফুট অংশ ভেঙে যায়। ফলে খোলাহাটির পাঁচটি গ্রাম প্লাবিত হয়। এ ছাড়া ফারাজিপাড়া এলাকায় গাইবান্ধা-সুন্দরগঞ্জ সড়কের কিছু অংশ ডুবে গেছে। ফলে যানবাহন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া সোমবার ভোরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানির চাপ বেড়ে যাওয়ায় ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের উত্তর কাতলামারি এলাকায় আরেকটি বাঁধের প্রায় ২০০ ফুট অংশ ভেঙে যায়। এতে উত্তর কাতলামারিসহ আশপাশের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়।এদিকে গতকাল রোববার ব্রহ্মপুত্র নদের পানির চাপে গাইবান্ধা সদর উপজেলার গিদারী ইউনিয়নের বাগুড়িয়া এলাকায় একটি বাঁধের ১০০ ফুট অংশ ধসে যায়। এতে বাগুড়িয়া এলাকার ৮ শতাধিক ঘরবাড়ি ও ১০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।গাইবান্ধা জেলা ত্রাণ কার্যালয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এসব ইউনিয়নের প্রায় ১ লাখ ১২ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া চারটি উপজেলার ৩৯৩ হেক্টর জমির পাট, শাকসবজি, বীজতলা ও আউশ ধান পানিতে ডুবে গেছে।এদিকে বন্যার পানি বেড়ে যাওয়ায় চারটি উপজেলায় ৯৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন আলী। গাইবান্ধার সিভিল সার্জন আবু হানিফ জানান, জেলার বন্যাকবলিত এলাকায় ১০৯টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। তবে এখনো ডায়রিয়া কিংবা পানিবাহিত কোনো রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি।যোগাযোগ করা হলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, ঘাঘট ও করতোয়া নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। আজ দুপুরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১১২ সেন্টিমিটার, তিস্তার পানি ১১ সেন্টিমিটার এবং ঘাঘট নদের পানি ৫৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। তবে করতোয়া নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার সামান্য নিচে রয়েছে।আজ দুপুরে গাইবান্ধার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক রোখসানা বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা, ফুলছড়ি ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় ৪০০ মেট্রিক টন চাল এবং দুই হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়েছে। এ ছাড়া পানিবন্দী মানুষদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে।
Check Also
কাউনিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসায়ীদের জরিমানা
আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি কাউনিয়া (রংপুর) কাউনিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সোমবার দুপুরে ৫ …
বন্যা ও বৃষ্টির প্রভাব কাউনিয়ায় কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা
আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া, বিশেষ প্রতিনিধ কাউনিয়া (রংপুর) রংপুরের কাউনিয়ায় কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি …
চিলমারীতে জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উযাপন
আলমগীর হোসাইন, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার …