বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন

Headline :
চিলমারীতে নাশকতার অভিযোগে গ্রেফতার- ৪ চিলমারীতে ৭৬ বোতল ফেন্সিডিলসহ ২ নারী আটক কুড়িগ্রামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ সভাপতি দুর্জয় গ্রেফতার চিলমারী সরকারী কলেজে নতুন অধ্যক্ষর যোগদান নৌডাকাতি রোধে পুলিশের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  রাজিবপুরে মুখে কালো কাপড় বেঁধে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ছাত্রদলের প্রতিবাদ গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবীতে কাউনিয়ায় মুখে কালো পতাকা ধারণ করে বিক্ষোভ মিছিল গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে চিলমারীতে জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল চিলমারী মডেল থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে সরঞ্জামসহ ৬ জুয়ারি গ্রেফতার  চিলমারীতে নানা আয়োজনে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া দিবস-২০২৫  পালিত

পানিতে পরে আরো এক শিশুর মৃত্যু:পানিবন্দী ৬ লাখ কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি।

জাহিদ আল হাসান,কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি :

কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। ব্রহ্মপূত্র ও ধরলা নদীর পানি স্থিতিশীল হলেও তীব্র ভাঙনের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বুধবার সকাল ৮টায় রৌমারীর বন্দবের এলাকায় এলজিইডি’র সড়ক ভেঙে যাওয়ায় গোটা উপজেলা এখন পানিবন্দী। এর আগে মঙ্গলবার রাতে রৌমারী দাঁতভাঙা এলাকার হাজিরহাট ও ধনারচরে এলজিইডির সড়ক ভেঙে ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এরফলে নতুন করে পঞ্চাশ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে ত্রান তৎপরতা শুরু হলেও বেসরকারি পর্যায়ের সংগঠনগুলো এগিয়ে না আসায় বানভাসীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে পরেছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ীতে আটকে পরা মানুষগুলো জ্বালানী সংকটের কারণে রান্না-বান্না করতে পারছে না। উচুঁ স্থানে গবাদিপশু রাখলেও গো-খাদ্যের অভাবে গৃহস্তরা অসহায় হয়ে পরেছে। এদিকে বুধবার দুপুরে উলিপুরের গুণাইগাছ ইউনিয়নের কাজির চক এলাকার সুমন মিয়ার দেড় বছরের শিশু ফুয়াদ পানিতে পরে মারা গেছে। এনিয়ে গত আটদিনে জেলায় পানিতে ডুবে মারা গেল ১৩ জন।

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যার ফলে ৫৬টি ইউনিয়নের ৪৯৮টি গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পরেছে। এতে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪শ পরিবারের ৬ লাখ ৯ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেড় লাখ ঘরবাড়ী। ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরো প্রায় ৫ হাজার মানুষ। বন্যায় ৩২ কিলোমিটার বাঁধ, ৭২ কিলোমিটার কাচা ও ১৬ কিলোমিটার পাকা রাস্তা ক্ষতির সম্মুক্ষীণ হয়েছে। বন্যায় ৪১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আংশিক এবং ২টি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ফসলের ক্ষতি হয়েছে ১৫ হাজার ১৬০ হেক্টর। জেলার ২১টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ৪হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী মো: রুমানুজ্জামান জানান, বুধবার বিকেল পর্যন্ত ব্রহ্মপূত্র নদের পানি ১ সে.মিটার বৃদ্ধি পেয়ে ১৩২ সে.মি এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩ সে.মি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদ সীমার ১০৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।অপরদিকে ধরলা নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে। যা বিপদসীমার ১১৬ সে.মিটার উপর দিয়ে বইছে।

জেলা জুড়ে বন্যা শুরু হলেও নড়েনড়ে বসেনি বেসরকারি সংগঠনগুলো। বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য পনির উদ্দিন আহমেদ চিলমারীতে বন্যার্ত ৫ হাজার পরিবারকে সহায়তা প্রদান করেন।

কুড়িগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি মো: জাফর আলী পাঁচগাছী ও ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নে ৭শ’ পরিবারে খাবারের প্যাকেট সরবরাহ করেন। এছাড়াও পৌর মেয়র আব্দুল জলিল পৌর এলাকার বন্যা দুর্গতদের মাঝে বিশ বস্তা চাল ও ৬শ’ কেজি আলু বিতরণ করেন।

সিভিল সার্জন ডা: এস এম আমিনুল ইসলাম জানান, বন্যার্তদের বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে কুড়িগ্রাম সদর ও চিলমারীতে দুটি ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট বসানো হয়েছে। দু’দিনে ৬ হাজার বন্যার্তকে জেরিকেনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়াও স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ৮৫টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। যারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করছে। স্বাস্থ্য বিভাগে পর্যাপ্ত পরিমানে ঔষধ, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট মুজদ আছে।

জেলা প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত ৫ মে.টন জিআর চাল, ৯ লক্ষ টাকা, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ঈদুল আজহা উপলক্ষে ৪ লাখ ২৮ হাজার ৬ হাজার ৫২৫টি পরিবারে ১৫ কেজি করে ৬ হাজার ৪২৮ মে.টন ভিজিএফ’র বরাদ্দ উপজেলাগুলোতে বিতরণ করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মো: হাফিজুর রহমান বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করে বলেন, বন্যার্ত সকল পরিবারে সহায়তা দেয়া হবে। কেউ যাতে বাদ না যায় তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *