রাজধানীর বাড্ডায় তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যায় প্রধান অভিযুক্ত হৃদয় জিজ্ঞাসাবাদে আরও সাত-আটজনের নাম বলেছে। তারাও নির্মম এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল। বুধবার ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার আবদুল বাতেন এসব তথ্য জানান। এর আগে মঙ্গলবার রাতে নারায়ণগঞ্জের ভুলতা থেকে হৃদয়কে গ্রেফতার করে ডিবি। বুধবার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে আবদুল বাতেন বলেন, গ্রেফতার হৃদয় স্কুলগেটে সবজি বিক্রি করত। সে রেনুকে স্কুলে ঢুকতে দেখেছিল। এরপর সন্তানকে ভর্তি করানোর ব্যাপারে সেখানে উপস্থিত অভিভাবকদের বিভিন্ন কথা জিজ্ঞাসা করেন রেনু। এক পর্যায়ে তিনি এক নারী অভিভাবকের বাসার ঠিকানা জিজ্ঞাসা করেন। এতে ওই নারী তাকে ছেলেধরা বলে সন্দেহ করেন। তখন হৃদয় এগিয়ে যায়। তার সঙ্গে আরও ১৫-২০ জন একত্রিত হয়। এ অবস্থা দেখে স্কুলের দোতলায় রেনুকে তালাবদ্ধ করে রাখে স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের পাশেই ছিল বাজার। ছেলেধরা আটকের খবরে বাজারের লোকজনও স্কুলে ঢুকে পড়ে। এর পর হৃদয়সহ অন্যরা তালা ভেঙে রেনুকে বাইরে নিয়ে আসে এবং পিটিয়ে হত্যা করে। ঘটনার পর হৃদয় নারায়ণগঞ্জে তার বাড়িতে চলে যায়। এ সময় সে তার মাথা ন্যাড়া করে এবং ব্যবহূত পুরনো পোশাক পুড়িয়ে ফেলতে বলে নানিকে, যেন কেউ তাকে শনাক্ত করতে না পারে। পুলিশ ঘটনার সময় হৃদয়ের পরনে থাকা কাপড় উদ্ধার করেছে। ডিবির এই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, যে অভিভাবক রেনুকে প্রথম ছেলেধরা বলে সম্বোধন করেছিলেন, তার বিষয়েও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। জড়িত অন্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের নাম পাওয়া গেলেও এই মুহূর্তে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এ ঘটনায় হৃদয় ছাড়াও সাতজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে জাফর নামে একজন ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, সামাজিক মাধ্যমে নজরদারি করছেন গোয়েন্দারা। কেউ উস্কানিমূলক বক্তব্য পোস্ট করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চালালে তাকে এবং ওই পোস্টে যারা মন্তব্য করবেন, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। এদিকে হৃদয়ের রিমান্ড শুনানিতে বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, আসামি যেভাবে ভিকটিমকে হত্যা করেছে, তাতে দেশবাসী স্তব্ধ হয়ে গেছে। ৪/৫ আসামির মধ্যে এই আসামি হচ্ছে মাস্টারমাইন্ড। বাচ্চাটা আজও তার মায়ের জন্য অপেক্ষা করে আছে। এটা শুধু একটি গুজব নয়; একটি বড় ধরনের যড়যন্ত্র। এজাহারে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অভিযোগ আনা হয়েছে। হত্যার পর আসামিকে যেন কেউ চিনতে না পারে সে জন্য সে মাথার চুল কেটে ফেলেছে। যেভাবে রেনুকে হত্যা করা হয়েছে, তা বলতে গিয়ে আইনজীবীরাও অশ্রুসিক্ত হন।
Check Also
কাউনিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালতে ব্যবসায়ীদের জরিমানা
আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া, বিশেষ প্রতিনিধি কাউনিয়া (রংপুর) কাউনিয়ায় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে সোমবার দুপুরে ৫ …
বন্যা ও বৃষ্টির প্রভাব কাউনিয়ায় কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা
আব্দুল কুদ্দুছ বসুনিয়া, বিশেষ প্রতিনিধ কাউনিয়া (রংপুর) রংপুরের কাউনিয়ায় কাঁচামরিচের কেজি ৪০০ টাকা দরে বিক্রি …
চিলমারীতে জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উযাপন
আলমগীর হোসাইন, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে জাতীয় জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন দিবস উযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রবিবার …