মোঃ অলমগীর হোমাইন,কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ
প্রথম শ্রেণীর কুড়িগ্রাম পৌরসভায় জনগণের ভাগ্যে ময়লার ভাগাড়! ডাস্টবিন উপচেপড়া ময়লার দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না শহরবাসী। একইভাবে শহরের রাস্তা-ঘাটসহ যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকায় স্বাভাবিক চলাচলও ব্যাহত হচ্ছে। গত ১৭ দিন ধরে প্রথম শ্রেণির এই পৌরসভায় এ দুরাবস্থা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে পৌরবাসীর মাঝে দেখা দিয়েছে চরম অসন্তোষ এবং উত্তেজনা।
জানা গেছে, গত ১৪ জুলাই থেকে পৌর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রাজস্ব খাত থেকে বেতন প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ফলে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মচারীরাও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করছেন না। এতে পৌর এলাকার পরিচ্ছন্নতা কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়েছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ জমায় চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে শহীদ জিয়া বাজার, হাসপাতাল, সবুজপাড়া, পুরাতন ষ্টেশন, জলিল বিড়ি ফ্যাক্টরী মোড় এলাকায় ময়লার স্তূপ জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে জনসাধারণের পাশাপাশি স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও সড়কে চলাচলকারীরাও চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। দুর্গন্ধে লোকজন নাকে রুমাল দিয়ে রাস্তায় চলাচল করছেন। একই সঙ্গে শহরের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকান মালিকরাও সারাদিন দুর্গন্ধের মধ্যে থেকে ব্যবসা চালাতে গিয়ে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
এদিকে কুড়িগ্রাম পৌর পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় জন্মনিবন্ধন সনদ, নাগরিত্ব সনদ, ওয়ারিশ সনদ, মৃত্যু সনদ, ট্রেড লাইসেন্স সংগ্রহ করতে না পেরে দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন পৌরবাসী। তাছাড়া রাতে বন্ধ থাকছে সব রাস্তার বৈদ্যুতিক বাতি। এছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় পরিবেশ দূষণ দেখা দিচ্ছে। মোটকথা সব ধরনের নাগরিক সেবা থেকে পৌরসভার নাগরিকরা বঞ্চিত রয়েছেন।
কুড়িগ্রাম পৌরসভা ভবনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার গেটে তালা ঝুলছে। গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন কয়েকজন সেবা প্রার্থী। এদের মধ্যে অনেকেই এসেছেন জন্মনিবন্ধন সনদ, নাগরিকত্ব, ওয়ারিশ ও মৃত্যু সনদ এবং ট্রেড লাইসেন্সের জন্য। প্রতিদিনই ঘুরছেন পৌরসভার কার্যালয়ে। থানাপাড়া এলাকার মমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি একটি ট্রেড লাইসেন্সের জন্য গত কয়েকদিন থেকে এসে দেখছি পৌরসভার অফিস গেট তালাবদ্ধ। চর হরিকেশ এলাকার রিয়াজুল ইসলাম বলেন, নাগরিকত্ব সনদের জন্য আমি এক সপ্তাহের বেশি দিন থেকে এসে দেখছি পৌরসভার গেট বন্ধ।
জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি একেএম সামিউল হক নান্টু বলেন, পৌরবাসীদের ট্যাক্সের টাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন হয় অথচ সেই পৌরবাসীদের জিম্মি করে এ ধরণের কৃত্রিম দুরাবস্থা সৃষ্টি করা গ্রহণযোগ্য নয়। পৌর এলাকার মানুষ চরম দুর্ভোগে রয়েছে। এখন দুর্বিসহ জীবন করছে তারা। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষের টনক নড়ছে না।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পৌর মেয়র আব্দুল জলিলের সাথে কথা বলার জন্য একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।