বৈরী আবহাওয়া ও পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে বুধবার ভোর থেকে ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোটসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ও মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া নৌপথে।
ভোর ৬টায় শিমুলিয়া ঘাট থেকে ছোট-বড় ২৫টি যানবাহন ও সাত শতাধিক যাত্রী নিয়ে ২০ মিনিটের ব্যবধানে দুটি কে-টাইপ ফেরি কাঁঠালবাড়ীর উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
ফেরি দুটি মাঝপদ্মায় পৌঁছালে প্রায় এক ঘণ্টা স্রোত ঠেলে কাঁঠালবাড়ী ঘাটের দিকে যেতে না পেরে আবার শিমুলিয়ার দিকে চলে যায়। এর পর থেকেই দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ। এতে দুই পাড়ে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে গরুবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যানবাহন।
বুধবার সরেজমিনে কাঁঠালবাড়ী ঘাট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গরুভর্তি ট্রাকের দীর্ঘ সারি। মঙ্গলবার রাত থেকে ঘাট এলাকায় প্রায় ৭০-৮০টি গরুভর্তি ট্রাক চারটি ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের গরু ব্যবসায়ীরা। দীর্ঘ সময় গরুভর্তি ট্রাকগুলো ঘাট এলাকায় বসে থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছে শত শত কোরবানির গরু। ঘাট কর্তৃপক্ষ বিকল্প রুট হিসেবে আরিচা ঘাট ব্যবহারের পরামর্শ দিলেও যানজটের কারণে সে উপায়ও নেই।
ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার গরু ব্যবসায়ী আবু কালাম মুন্সি বলেন, মঙ্গলবার রাত ১২টায় একটি ট্রাকে করে ১৬টি গরু নিয়ে কাঁঠালবাড়ী ঘাটে এসে পৌঁছাই। রাতে ফেরির কোনো সিরিয়াল পাইনি। ভোরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চম দুর্ভোগে পড়েছি। সকাল ১০টায় অসুস্থ হয়ে আশি হাজার টাকা মূল্যের একটি গরু মারা যায়। বাকি গরুগুলোও অসুস্থ হয়ে পড়ছে।
খুলনার দৌলতপুর উপজেলায় অপর গরু ব্যবসায়ী সেলিম মোল্লা বলেন, দুটি ট্রাকে আমার ২১টি গরু রয়েছে। ভোরে ঘাটে এসে দেখি, ফেরি চলাচল বন্ধ। দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থেকে গরুগুলো অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ট্রাকে কোনো খাবারও নেই। এখন গরুগুলোকে কী খাওয়াব?
এদিকে নৌযান চলাচল বন্ধ থাকার পরও ঘাটে অবস্থানরত ফেরিগুলোতে যাত্রীরা দাঁড়িয়ে, বসে থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করছেন। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে এ-ঘাট থেকে ও-ঘাট ছোটাছুটি করছেন তারা।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) কাঁঠালবাড়ী ঘাট ইনচার্জ আবদুস সালাম মিয়া বলেন, প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে দুর্ঘটনা এড়াতেই ফেরিগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। আমরা গরু ব্যবসায়ীদের দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া হয়ে ঢাকায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। ঘাটে বসে থাকলে তাদের দুর্ভোগ আরও বাড়বে। আবহাওয়া অনুকূলে না আসা পর্যন্ত কোনো নৌযান চলাচল করবে না।