ইব্রাহীম খলিল তুহিন,রংপুর প্রতিনিধিঃ
গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক পিটিয়েও ক্ষ্যান্ত হয়নি, তার মাথার চুল কেটে গলায় জুতার মালা পরিয়ে পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়েছে। দেবরের মেয়ের বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন- অপবাদে এ নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ওই গৃববধূ মানিকা বেগম।
বুধবার এ ঘটনা ঘটেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার বেতগাড়ি ইউনিয়নের পুটিমারী গ্রামে। এ ঘটনায় মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারীর স্বামী। পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন মানবাধিকার কর্মীরা।
এলাকাবাসী জানান, দেড় মাস আগে মানিকা বেগমের দেবর আব্দুল মতিনের মেয়ে মৌসুমীর বিয়ে হয় রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীরের লিটন মিয়ার সঙ্গে। বিয়ের পর লিটনের সন্দেহ হয়, বিয়ের আগে কারও সঙ্গে মৌসুমীর অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি ঘটলে গত ২১ জুলাই লিটন মৌসুমীকে তালাক দেন। এ ঘটনায় মতিনের পরিবারের ধারণা, মানিকা বেগমই জামাইকে নানা কথা বলে মৌসুমীর সংসার ভেঙেছে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মধ্যে কয়েকদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এরই জেরে বুধবার বিকেলে আব্দুল মতিন, তার স্ত্রী, মেয়ে ও তার ভাই আব্দুল মোতালেবসহ পরিবারের লোকজন এক হয়ে মানিকা বেগমকে বেধড়ক মারপিট করে। একপর্যায়ে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে মাথার চুল কেটে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয়।
খবর পেয়ে বিকেলে ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম মানিকা বেগমকে উদ্ধার করে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার মানিকার স্বামী মোকলেছ মিয়া বাদী হয়ে ছয়জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পর এজাহারভুক্ত আসামি আব্দুল মতিন ও মোতালেবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে বেতগাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান লিপটন বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা পরস্পর দেবর-ভাবি-ভাই-ভাতিজি সম্পর্কের।
ইউনিটি ফর ইউনিভার্স হিউম্যান রাইটস অব বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন রংপুর বিভাগীয় কমিটির নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ ধরনের নারী নির্যাতনের ঘটনা অত্যন্ত নির্মম। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।
গঙ্গাচড়া থানার ওসি (তদন্ত) সুশান্ত কুমার সরকার জানান, এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।