নাদিরা খানম তুলি,স্টাপ রিপোর্টারঃ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় অন্য সময়ে যানজটে সড়ক পার হতে সময় লাগত ৩০ মিনিটের বেশি। ঈদ সামনে রেখে সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও ভুলতার সেই পয়েন্টই মাত্র ৪ মিনিটে পার হওয়া যাচ্ছে। ফ্লাইওভার খুলে দেওয়াতেই এটি সম্ভব হয়েছে। যানজট নেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পয়েন্টগুলোতেও। এতে এ দুটি মহাসড়ক ব্যবহারকারী মানুষ স্বস্তিতেই ঘরমুখী হতে পারছেন। শনিবার সরেজমিন ঘুরে যাত্রী, চালক আর পুলিশের সঙ্গে কথা বলে মিলেছে এমন তথ্য। স্থানীয় লোকজন বলছেন, এমনিতেই ভুলতা এলাকায় যানজট লেগে থাকত। ফ্লাইওভার নির্মাণ কাজের জন্য সড়কও সরু হয়ে গিয়েছিল। এ নিয়ে গত ঈদেও চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তবে এবার আর তা নেই। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঈদের আগে ভুলতা এলাকার ফ্লাইওভার খুলে দেওয়ায় ওই পয়েন্টে এখন আর যানজট নেই। আগে সেখানে নিয়মিত যানজট হতো। ওই এলাকা পার হতে আধাঘণ্টা সময় লাগত। এখন সেখানে ফ্লাইওভার ব্যবহার করে মাত্র ৩ থেকে ৪ মিনিটেই গাড়ি চলে যাচ্ছে। ভুলতা ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল সালেহ মো. নুরুজ্জামান বলেন, ঈদে ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি দূর করতে ফ্লাইওভারটি সাময়িকভাবে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে ওই এলাকার দীর্ঘদিনের যানজটের চিত্র দূর হয়ে গেছে। তিনি জানান, ১৮ আগস্ট পর্যন্ত ফ্লাইওভার দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারবে। এটিতে বাতি লাগানো ও সৌন্দর্যবন্ধন কাজের জন্য আবার সাময়িকভাবে বন্ধ করা হবে। এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বাড়লেও যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। ঘরমুখো মানুষের চাপ থাকলেও সোনারগাঁওয়ের অংশে কোথাও যানজট নেই। শনিবার সোনারগাঁয়ের কাঁচপুর থেকে মেঘনা সেতু পর্যন্ত সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কাঁচপুর, মদনপুর, মোগড়াপাড়াসহ প্রতিটি বাসস্ট্যান্ডেই মানুষের চাপ রয়েছে। তবে ভোগান্তি ছাড়াই গাড়িগুলো চলছে। ওই এলাকায় তিশা সার্ভিসের চালক সাদেক মিয়া জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এবার যানজট নেই। মহাসড়কে দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় মেঘনা-গোমতী সেতু নির্মাণ করার কারণে চলাচল অনেক সহজ হয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে একটানে গাড়ি নিয়ে কুমিল্লা পর্যন্ত চলে যাওয়া যায়। কাঁচপুরে ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মো. শরফুদ্দিন জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে সাইনবোর্ড থেকে কাঁচপুর সেতুর পশ্চিম পাশে আগে প্রতিনিয়তই যানজট লেগে থাকত। কিন্তু কাঁচপুর সেতু খুলে দেওয়ায় এখন আর যানজট হয় না। স্টার লাইন বাসের চট্টগ্রামের যাত্রী আহমেদ হুমায়ুন কবির জানান, ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুবাহী ট্রাক মহাসড়কে চলাচল করায় গাড়ির চাপ বেশি মনে হচ্ছে। তবে দুর্ভোগ হওয়ার মতো যানজট নেই। সড়কের অবস্থাও ভালো। ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী শ্যামলী পরিবহনের যাত্রী কবির আহমেদ শাওন বলেন, সকাল ১০টায় তিনি বাসে উঠেছেন, এরপর থেকে কোথায় যানজট পাননি। একটু ধীরগতিতে গাড়ি চলছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, কাঁচপুর পয়েন্ট, মেঘনা সেতুর সামনে এবং পেছনেও সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এসব ক্যামেরা ফুটেজ দেখে দ্রুতই নির্দেশনা দিয়ে সড়কে শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছে হাইওয়ে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক মোল্লা তাসলিম হোসেন বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কের যে যানজট এখানে ছিল, সেটি এখন একেবারেই নেই। এখন ঘরমুখো মানুষের স্বস্তি এসেছে। তিনি জানান, রোজার ঈদের আগে দ্বিতীয় কাঁচপুর ও মেঘনা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ার পর থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট কমে আসে।