ইব্রাহীম খলিল তুহিন, রংপুর প্রতিনিধিঃ
রংপুর মহানগরীর নজিরেরহাটে তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী ২৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা শিশুটি বর্তমানে একটি বেসরকারি সংস্থার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকের রহস্যজনক ভাবে বিষক্রিয়ায় মারা গেছে। এ ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে হাজিরহাট থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ-আরপিএমপির হাজিরহাট থানার এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলম জানান, রংপুর মহানগরীর নজিরের হাটের শাফিয়ার রহমানের স্ত্রী বিলকিস বেগম পার্শ্ববর্তী জুয়েলের মালিকানাধীন সোনার বাংলা নার্সারি ও এগ্রোবাংলা লিমিটেডের কেয়ারটেকার তোফাজ্জল হোসেনের রান্না বাড়ার কাজ করতো। মায়ের কাজ করার সুবাদে তার কন্যা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সেখানে যাতায়াত করতো। মায়ের সাথে সেও ঐ নার্সারিতে বিভিন্ন কাজ কর্ম করতো। এরই মধ্যে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে। বিষয়টি সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পর দেখা যায় সে ২৫ সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এরপর মেয়েটিকে নজিরেরহাটে ল্যাপরোসি মিশনে ভর্তি করা হয়। মেয়ের মা ১৮ আগস্ট হাজিরহাট থানায় অজ্ঞাতনামাদের অভিযুক্ত করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন।
হাজিরহাট থানার ওসি মোস্তাফিজার রহমান জানান, যার বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রাথমিক অভিযোগ সেই ধর্ষক মারা গেছে। প্রাথমিকভাবে তার বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর বিষয়টি বলা হচ্ছে। তবে তার মৃত্যুটা স্বাভাবিক নাকি বিষক্রিয়ায় হয়েছে, সে বিষয়টি আমরা তদন্ত শুরু করেছি। হাসপাতালের কাগজপত্র নেয়ার চেষ্টা করছি। তিনি জানান, মেয়েটি ছোট ও অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় এখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় আছে। তাকে আমরা রিকভারি করার চেষ্টা করছি। তবে খুব শীঘ্রই ধর্ষণ ও অভিযুক্ত ধর্ষকের মৃত্যুর বিষয়টির কুলু উদঘাটন করা হবে।
ল্যাপ্রসি মিশনের সুপারভাইজার সিস্টার নওমি জানান, শিশুটি এখনও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে সেবা যত্ন দিয়ে সুস্থ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রকৃত বিচার হওয়া দরকার।
রাধাকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জোবায়দা বেগম জানান, আমাদের স্কুলের শিশু মেয়েটির ওপর যে শারীরিক নির্যাতন করা হলো তা আদিম উদ্যমতাকেও হার মানিয়েছে। আমরা এর যথাযথ বিচার চাই। বিষয়টি জানার পর পরই ল্যাপ্রসি মিশনে আমি সহ কয়েকজন শিক্ষক গিয়ে মেয়েটিকে দেখে এসেছি। শিশু বয়সে এখন তার পেটে আরেকটি শিশু। এই যন্ত্রণার ভার মেয়েটি সইতে পারছে না। আমরা এ ঘটনার মুল তথ্য উদঘাটনের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ জানাই। স্কুল বন্ধ থাকায় আমরা বিষয়টি আগে শুনিনি। মেয়েটির পরিবারও আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি। স্কুল খোলার পর পুলিশ এসেছিল। আমরা পুলিশকে প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছি। সে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষাও দিয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা চাই, মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসা দিয়ে আগে মানসিকভাবে সুস্থ করা হোক।