সাতক্ষীরা প্রতিনিধিঃ
প্রেমিকাকে না পেয়ে গায়ে কেরোসিন দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন বিশ্বজিত দে। পরে আগুন সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়লে বাঁচতে পুকুরে ঝাঁপ দেনে তিনি। এরপর স্থানীয়রা বিশ্বজিতকে উদ্ধার করে সাতক্ষীরার তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সেখান থেকে চিকিৎসকরা খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার সকালে তার মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে গত শনিবার সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খলিলনগর ইউনিয়নের হরিশচন্দ্রকাটি দাসপাড়ায় নিজের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেন বিশ্বজিত। তিনি উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের গোপালপুর গ্রামের সন্তোষ দের ছেলে।
বিশ্বজিত দের মামা সঞ্জয় দত্তের অভিযোগ, হরিশ্চন্দ্রকাটি গ্রামের এক কিশোরীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল বিশ্বজিতের। সে সুবাদে প্রেমিকার বাড়িতে গেলে তাদের বাড়ির লোকজন বিশ্বজিতকে মারপিট করে গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপর পুকুরে ফেলে দেয়। পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর খুলনায় পাঠানো হয় বিশ্বজিতকে।
তবে ঘটনার বিষয়ে তালার খলিলনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান রাজু জানান, বিশ্বজিত কিশোরী প্রেমিকাকে বিয়ে করবে বলে গত শুক্রবার দুপুরের দিকে ১৫-২০ জনকে ওই মেয়েটির বাড়িতে পাঠান। মেয়েটির বিয়ের বয়স না হওয়ায় পরে বিয়ে দেয়া হবে বলে জানানো হয়। এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় বিশ্বজিতের আরও তিন বন্ধু মেয়েটির বাড়িতে এসে মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য বোঝায়। তবে মেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয় বয়স না হলে বিয়ে দেবে না।
তিনি আরও জানান, এরপর শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্বজিত নিজে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য প্রস্তাব দেন। মেয়ের পরিবার রাজি না হওয়ায় বিশ্বজিত সেখানেই গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন। একপর্যায়ে আগুন গায়ে ছড়িয়ে পড়লে সইতে না পেরে বিশ্বজিত পাশের একটি পুকুরে লাফ দেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
তালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাজীব সরদার জানান, বিশ্বজিতের শরীরের ৪৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
তালা থানার ওসি মেহেদী রাসেল বলেন, ঘটনার দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছিল। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে ছেলে ও মেয়েটির মধ্যে প্রেমজ সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিশ্বজিত নামের ছেলেটি মারা গেছে বলে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।