ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
ভূরুঙ্গামারীতে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ফিরছে মানুষ। বেড়েছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমনের ঝুকি। আতঙ্কে উপজেলাবাসী।বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলাকে আনুষ্ঠানিক ভাবে লকডাউন ঘোষনার পর শুক্রবার ভোরে উপজেলার আন্ধারীঝাড় চেক পোষ্ট থেকে গাজিপুর থেকে আসা ১৪জনকে আটক করে ভূরুঙ্গামারী সরকারী কলেজে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। দেশব্যাপী চলা সাধারন ছুটিতে বন্ধ রয়েছে সকল প্রকার যানবাহন চলাচল। মানুষের আসা যাওয়া ঠেকাতে রাস্তায় রাস্তায় বসানো হয়েছে অস্থায়ী চেকপোস্ট। তারপরেও ঢাকার মুন্সিগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ, গাজীপুর ও ফরিদপুরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে নদীপথে নৌকায়, সড়কপথে পিকআপ, কাভার্ড ভ্যান, মালামাল আনা নেওয়ার ট্রাকে করে কর্মস্থল থেকে বাড়ী ফিরেছে অসংখ্য মানুষ। এর সংখ্যা প্রায় সহ¯্রাধিক। এ ¯্রােত অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার আটক কৃতদের মধ্যে ৬জন পুরুষ ৬জন নারী ও ২জন শিশু।এদের সবাই গাজিপুরের ভাওয়ালে
গার্মেন্টস এ কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এদেরকে রায়গজ্ঞ ব্রীজের উত্তর পার্শ্বে আন্ধারীঝার
থেকে পুলিশ পাহারায় ভূরুঙ্গামারী সরকারী কলেজে আনা হয়। করোনা সংক্রমন ঠেকাতে এদের সবাইকে ১৪
দিনের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়।এদের সবার বাড়ী সোনাহাট ইউনিয়নের মাহিগঞ্জ গ্রামে।
চরভূরুঙ্গামারী ইউপি চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল জানান, ইতোমধ্যে নদী ও সড়কপথে বিভিন্নভাবে প্রায়
২শত লোক এলাকায় ফিরেছেন। যারা এসেছেন তাদের বাড়ী বাড়ী ঘুরে তালিকা করে হোম
কোয়ারান্টাইনে থাকতে বলা হচ্ছে। আমরা গ্রামপুলিশ দিয়ে তাদের কে নজড়দারি করছি। সাধ্যমত তাদের
ঘরে খাবার পৌছানো হচ্ছে। প্রায় একই রকম কথা জানান, তিলাই ইউপি চেয়ারম্যান ফরিদুল হক শাহিন
শিকদার , বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান প্রভাষক মোখলেছুর রহমান সোনাহাট ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান
আলী ও জয়মনিরহাট ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান ।
খোজনিয়ে জানা গেছে গত ১৫ দিনে বেশ কয়েকটি পিকআপ, কাভার্ডভ্যান, মালামাল আনা নেওয়ার
ট্রাকে এলাকায় ফিরেছে চরভূরুঙ্গামারী ,তিলাই,সোনাহাট,বলদিয়া, আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের আরো
প্রায় দেড় হাজার মানুষ। এসব মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে উপজেলার প্রায় সব ইউনিয়নের
গ্রামগঞ্জে।স্থানীয়রা জানান, বাড়ী ফেরা ওই মানুষদের অনেকেই কোয়ারান্টাইন মানছেন না। এতে
এলাকায় বেড়ে গেছে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সামাজিক সংক্রমনের ঝুকি। ইতোপুর্বে যারা
ফিরেছেন তাদের বিষয়ে তাদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে কোয়ারান্টাইন মানতে বলেছেন। যাতে তারা এটি
মেনে চলেন এজন্য তারা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে কাজ করছেন। এছাড়া মানুষকে ঘরে
রাখতে প্রশাসনিক তৎপরতা অব্যাহত আছে।
ভূরুঙ্গামারী থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাঃ আতিয়ার রহমান বলেন, যেহেতু তারা করোনা সংক্রমিত
এলাকা গাজিপুর থেকে এসেছেন তাই সংক্রমন রোধে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে রাখা
হয়েছে। এখন থেকে যারাই আসবে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোরান্টাইনে রাখা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা এএসএম সায়েম জানান ,আমরা উপজেলা বাসী আল্লাহর রহমতে এখনো
ভালো আছি।এ যাবত ২৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছে । ২০জনের নমুনা পরিক্ষার ফলাফল
নেগেটিভ পেয়েছি। কিন্তু এখন যারা আসছে তাদের নিয়ে ঝুকি বাড়ছে।
আজ(শুক্রবার) যে ১৪ জন প্রাতিষ্ঠানিক কোরান্টাইনে রাখা হয়েছে তাদের বাদ নামাজ স্বস্থ্য পরিক্ষা করা
হবে।যাদের করোনার লক্ষন সন্দেহ হবে তাদের নমুনা আগামী কাল (শনিবার) নেয়া হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফিরুজুল ইসলাম জানান, আমরা ইতোমধ্যে ভূরুঙ্গামারী সরকারী
কলেজকে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারান্টাইন হিসেবে প্রস্তুত করেছি। আজ (শুক্রবার) যে ১৪জন এসেছে তাদের
সেখানে স্বাস্থ্য বিধি মেনে থাকা ও খাওয়ার ব্যাবস্থা করা হয়েছে। এখন থেকে যারা করোনা সংক্রমন
এলাকা থেকে আসবে তাদেরকে প্রাতিষ্ঠানিক কোরান্টাইনে রাখা হবে।