চিলমারী প্রতিনিধিঃ
আজ মঙ্গলবার কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী অষ্টমীর স্নান ও মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রায় ৪ শত বছর ধরে প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এই ঐতিহ্যবাহী স্নান উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। হিন্দু ধর্ম মতে এটি একটি পুণ্য কর্ম এবং স্নানের স্থানটি তীর্থ স্থান। এবারে পঞ্জিকা হিসাব অনুযায়ী সোমবার রাত ১০টা থেকে শুরু হয়ে মঙ্গলবার রাত ১০টা পর্যন্ত স্নানের সময়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীরা সারাদিনব্যাপী নিজেদের সুবিধামত সময়ে স্নানকার্য সম্পন্ন করেন।
হে মহা ভগ ব্রহ্মপুত্র, হে লৌহিত্য, তুমি আমার পাপ হরণ করো। মন্ত্র উচ্চারণ করে ব্রহ্মার নিকট কৃপা চেয়ে স্নান উৎসবে মেতে উঠেন পুণ্যার্থীরা। প্রায় ৫ লক্ষাধিক পুণ্যার্থীর পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছিল চিলমারীর ব্রহ্মপুত্র পাড়ের প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকা। উপজেলার রমনা মডেল ইউনিয়নের রমনা ঘাট থেকে জোরগাছ ঘাট পর্যন্ত ছিল স্নান স্থানের ব্যাপ্তী। স্নান উৎসবকে ঘিরে কয়েকদিন আগে থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত হতে পুণ্যার্থীর ভিড় জমে চিলমারী বন্দর ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে।
রংপুর থেকে স্নান উৎসবে আসা পুণ্যার্থী বিউটি রানী জানান, (মঙ্গলবার ) অষ্টমী হওয়ায় অষ্টমী স্নানের আনন্দটা একটু বেশী। তাই অনেক কষ্ট করে স্নান করতে এসেছি, পরিবেশ ভাল থাকায় স্নান করে তৃপ্তিও পেয়েছি।
অষ্টমী স্নান উৎসব কমিটির ভাষ্যমতে প্রতি বছরের মত এবারও ভারত, নেপাল ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অন্তত ৫ লক্ষাধিক পুণ্যার্থী যোগ দিয়েছে স্নান উৎসবে। স্নান উৎসবটি মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভারত ও নেপাল থেকে বেশি সংখ্যক হিন্দু ধর্মাবলম্বী এসেছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে ঐতিহ্যবাহী এই স্নান মেলার জন্য নির্দিষ্ট ঘাট না থাকায় প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে উন্মুক্ত স্নানঘাটে পুণ্যার্থীরা স্নানপর্ব সম্পন্ন করেছেন। স্নান উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দূর-দূরান্ত থেকে আসা পুণ্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির পর্যাপ্ত সদস্য মোতায়েন করাসহ ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশী পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
স্নান উৎসব কমিটির আহবায়ক বিষু চন্দ্র বর্মন বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে স্নান সম্পন্ন হয়েছে, এবারে দেশ-বিদেশের প্রায় ৫ লাখ পুণ্যার্থী স্নান উৎসবে যোগ দিয়েছিল। তিনি আরো জানান, পরিবেশ অনুকূলে থাকায় অন্যান্য বারের তুলনায় পুণ্যার্থীর সংখ্যা অনেক বেশী হয়েছিল।